জাতীয়

রোহিঙ্গা ইস্যুতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক বৃহস্পতিবার

সচিবালয় প্রতিবেদক : রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনকে গুরুত্ব দিয়ে মাদক পাচারসহ বিভিন্ন ইস‌্যুতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক আগামীকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে। দুই দিনব্যাপী এই বৈঠকে স্থান পাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, ইয়াবার মতো মাদকদ্রব্য চোরাচালান বন্ধ ও সীমান্তে দুই দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতার বিষয়গুলো। গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠক গত ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। বৈঠককে কেন্দ্র করে মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খ শোয়ের ঢাকা সফরের কথা থাকলেও তিনি শেষ মুহূর্তে তা পিছিয়ে দেন। ফলে বৈঠকটি তখন স্থগিত করা হয়। পরবর্তীকালে দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যমে আগামীকাল এই বৈঠক শুরু হচ্ছে। আগামীকাল ১৫ থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকটি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে, মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খ শোয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দিতে আগামীকাল সকালেই ঢাকা আসছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বাংলাদেশের পক্ষে এ বৈঠকে নেতৃত্ব দেবেন। দুই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, ইয়াবার মতো মাদকদ্রব্য চোরাচালান বন্ধ ও সীমান্তে দুই দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতার বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। অন্যদিকে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে এর আগে দেওয়া তালিকা অনুযায়ী আরাকান স্যালভেশন আর্মি বা আরসার সদস্যদের বাংলাদেশ থেকে আটক ও হস্তান্তরের বিষয়টি উত্থাপন করতে পারে। দুই দেশের মধ্যে সম্মতি ও চুক্তি হওয়ার পরও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় বৈঠকটিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। মিয়ানমারে নিপীড়নের মুখে গত কয়েক দশকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা। এরপর গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনে নতুন করে সেনা অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। সেনাবাহিনীর ওই অভিযান এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে ব্যাপক আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে শরণার্থীদের ফেরত নিতে সম্মত হয় মিয়ানমার। রোহিঙ্গাদের ঘরে ফেরার পথ তৈরি করতে গত ২৩ নভেম্বর নেইপিদোতে দুই দেশের মধ্যে একটি সম্মতিপত্র স্বাক্ষরিত হয়। ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠন করা হয় তিন সপ্তাহ পেরিয়ে যাওয়ার পর। গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর ঢাকায় যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের টার্মস অব রেফারেন্স ঠিক করা হয়। সম্মতিপত্রে স্বাক্ষরের ৫৪ দিনের মাথায় দুই পক্ষ ১৬ জানুয়ারি ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ চূড়ান্ত করে। আর প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য সম্মতিপত্রে নির্ধারিত দুই মাস সময় শেষ হয় গত ২৩ জানুয়ারি। আশা করা হচ্ছে, বাংলাদেশ-মিয়ানমার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বিষয়টির একটি সুরাহা আসতে পারে। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/হাসান/সাইফুল