জাতীয়

দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষ জোর দিতে হবে

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বলেছেন, দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রয়োজনীয় নীতিমালার সংস্কার করা হলে প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৫ থেকে ৯ শতাংশে উন্নীত করা সম্ভব। এছাড়া সকল সমুদ্রবন্দর, নদীবন্দর এবং স্থলবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন ও সেখানে নিয়োজিতদের দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষভাবে জোর দিতে হবে। মঙ্গলবার রাজধানীর লেকশোর হোটেলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত 'অভ্যন্তরীণ নৌপথ : আর্থিক সম্ভাবনার সুযোগ' শীর্ষক এক সেমিনারে  প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ড. মশিউর রহমান বলেন, ভারতের সাথে ট্রান্সশিপমেন্ট কার্যকরভাবে চালু করতে হলে ভারতের সাথে এ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা প্রয়োজন। ট্রান্সশিপমেন্ট ব্যবস্থা চালু হলে আয় কমে যাওয়ার সম্ভাবনা তেমন নেই, বরং আমাদের বন্দরের পাশাপাশি সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাবে। এ সময় তিনি দ্রুততম সময়ে পণ্য খালাসের জন্য কাস্টম অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনা দক্ষতা আরো বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি। এক্ষেত্রে নৌ পরিবহন খাতের অবস্থান আরো নাজুক। বিশেষত চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কন্টেইনার পরিবহনে সড়ক ও রেল পথের ওপর বেশি মাত্রায় নির্ভরশীল। এ ক্ষেত্রে নৌপথের ব্যবহার বাড়ানো সম্ভব হলে সময় এবং ব্যবসায় ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে। প্রস্তাবিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর সঙ্গে নৌপথ ও সমুদ্রবন্দরগুলোর যোগাযোগ বাড়াতে কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নেরও আহ্বান জানান তিনি। জাতীয় সংসদের কার্য উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান এবং জাতীয় সংসদের নৌ মন্ত্রণালয়বিষয়ক স্থায়ী কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার পাঁনগাও এবং পায়রা বন্দর স্থাপনের মাধ্যমে দেশের নৌ পথের উন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বর্তমানে পাঁনগাও বন্দর কর্তৃপক্ষের আওতায় তিনটি, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর দুটি, বিআইডব্লিউটিসির তিনটি এবং বেসরকারি মালিকানায় ৫০টি জাহাজ পরিচালনার অনুমোদন রয়েছে। নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, পাঁনগাও বন্দরে কন্টেইনার পরিবহনের ক্ষেত্রে তিন বছরের জন্য শুল্ক চার্জ প্রায় ৭০শতাংশ হ্রাস করা হয়েছে। মংলা বন্দরে কন্টেইনার পরিবহনের ক্ষেত্রে শুল্ক চার্জ তিন বছরের জন্য ৬৫-৭০ শতাংশ কমানো হয়েছে। পাঁনগাও বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত প্রতি কন্টেইনারের চার্জ হলো ১০০ মার্কিন ডলার। তিনি আরো বলেন, মংলা বন্দর দীর্ঘদিন যাবত পরিচালিত হলেও বড় জাহাজের কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এর জন্য এখন পর্যন্ত কোনো ক্রেন নেই। বেসরকারি মালিকানায় পরিচালিত বন্দরগুলোর সুষ্ঠু বিকাশে নীতিমালা ও আইন প্রণয়ন জরুরি। পণ্য খালাসে জটিলতা ও ব্যয় হ্রাসে গভীর সমুদ্র এলকায় ভাসমান বন্দর স্থাপনেরও প্রস্তাবসহ উৎপাদিত পণ্য সংরক্ষণে শিল্প-কারখানা ও অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে স্টোরেজ ব্যবস্থাপনা আরো সম্প্রসারণের জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান নূর-ই-আলম চৌধুরী। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা চেম্বারের আহ্বায়ক ও সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেটের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াসির রিজভী। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআই সহ-সভাপতি রিয়াদ হোসেন, পরিচালক হোসেন এ সিকদার, ইমরান আহমেদ, খন্দকার রাশেদুল আহসান, মো. আলাউদ্দিন মালিক, মোহাম্মদ বাশীর উদ্দিন, নূহের লতিফ খান, ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী, মহাসচিব এ এইচ এম রেজাউল কবির প্রমুখ। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/নাসির/রফিক