জাতীয়

‘জাপানি কোম্পানি দুর্নীতির শিকার হলে দুদককে জানান’

নিজস্ব প্রতিবেদক : জাপানি কোম্পানি ঘুষ বা দুর্নীতির শিকার হন বা হতে যাচ্ছেন এমন কোনো ঘটনা তাৎক্ষণিকভাবে কমিশনকে জানালে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম‌্যান ইকবাল মাহমুদ। সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইসু ইজুমির নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে আসলে তিনি এ কথা বলেন। দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ তাদেরকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, জাপান বাংলাদেশের অকৃত্রিম এবং দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত বন্ধু। বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপান এককভাবে সর্বোচ্চ উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্র। দুদক সকল প্রকার প্রতিকারমূলক কার্যক্রম নিরপেক্ষভাবে পরিচালনা করা হয়। এক্ষেত্রে ব্যক্তির রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাগত বা অন্য কোনো পরিচয়কে কমিশন ন্যূনতম গুরুত্ব দেয় না। বরং অভিযোগের বস্তুনিষ্ঠতাই কমিশনের একমাত্র বিবেচ্য বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিগত দুই বছরে ছয় শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার, প্রতিনিয়তই দুর্নীতিবিরোধী অভিযান এবং ফাঁদ মামলা পরিচালনার বিষয় উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কমিশন ‘শুন্য সহিষ্ণুতা’ নীতি অবলম্বন করেছে। জাপানের রাষ্ট্রদূত দুদকের কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশের বিকাশমান অর্থনীতি এবং ভৌগলিক অবস্থানের কারণেই জাপানের ব্যবসায়ীরা এদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। বাংলাদেশের বিনোয়োগ পরিবেশ হয়রানিমুক্ত থাকলে, বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগের সর্বোচ্চ ঢেউ আসবে জানিয়ে-রাষ্ট্রদূত এক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশনের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদক বিনিয়োগ তথা ব্যবসার পরিবেশ সমুন্নত রাখতে বদ্ধপরিকর। বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে এসে যদি কোনো জাপানি কোম্পানি ঘুষ বা দুর্নীতির শিকার হন বা হতে যাচ্ছেন এমন কোনো ঘটনা তাৎক্ষণিকভাবে কমিশনকে জানালে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ জাতীয় অভিযোগ জানানোর জন্য কমিশনের দ্বার আপনাদের জন্য উন্মুক্ত। দুদক অভিযোগ কেন্দ্রের হটলাইন-১০৬ এ যেকোনো অভিযোগ জানানোর সুযোগ রয়েছে। প্রয়োজন হলে আমার নিজের ফোনেও আপনি অভিযোগ জানাতে পারেন। জাইকার সহযোগিতায় পরিচালিত গণশুনানিসহ বিভিন্ন দুর্নীতি প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম অবহিত করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কমিশন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে সততা ও নিষ্ঠাবোধ প্রোথিত করার জন্য দেশের প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সততা সংঘ, আট শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সততা স্টোর স্থাপন, এছাড়া ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বিভিন্ন সু-বচন সংবলিত শিক্ষা উপকরণ যেমন-খাতা, কলম, জ্যামিতি বক্স, স্কেল, ছাতা ইত্যাদি বিতরণ করছে। তিনি বলেন, নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিনির্মাণেই কমিশন এসব কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কমিশনের কর্মকর্তাদের তদন্তের সক্ষমতা আরও বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ প্রদানে জাপানের সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন। এ সময় রাষ্ট্রদূত দুদক চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের সকল কার্যক্রম বাংলাদেশের উন্নত ভবিষ্যতের সাথে সম্পৃক্ত। প্রশিক্ষণসহ দুদকের সার্বিক কার্যক্রমে জাপানের সহযোগিতা অব্যহত থাকবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ জাপানের রাষ্ট্রদূতের কার্যালয়ের দ্বিতীয় সচিব মাসাতোশি হিগুচি।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১১ জুন ২০১৮/এম এ রহমান/সাইফ