জাতীয়

প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক :  দেশের প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহে।  এ উপলক্ষে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।  মুসল্লিদের ঈদ জামাত আদায়ে জাতীয়  ঈদগাহ এখন প্রস্তুত। আগামীকাল শনিবার পবিত্র ঈদুল ফিতর।  শুক্রবার সন্ধ্যায় পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার কথা জানিয়ে এ ঘোষণা দিয়েছেন ধর্মমন্ত্রী ও জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ মো. মতিউর রহমান। এর আগে সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক বসে। জাতীয় ঈদগাহে দেশের প্রধান ঈদ জামাত সকাল সাড়ে ৮ টায় অনুষ্ঠিত হবে। নামাজে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। জাতীয় ঈদগাহে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ, প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্য বিচারপতি,বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, এমপি, কূটনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাসহ একসঙ্গে লাখো মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবেন। নারীদের জন্যও আলাদা নামাজ পড়ার ব্যবস্থা থাকছে। প্রবেশের জন্য রাখা হয়েছে তিনটি গেট। সরেজমিনে ঈদগাহ ঘুরে দেখা গেছে, সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বসানো হয়েছে। কন্ট্রোল রুম থাকছে চারটি। নিরাপত্তার চাদরে ঘিরে ফেলা হয়েছে জাতীয় ঈদগাহ ও আশপাশের এলাকা। নির্বিঘ্নে ঈদের নামাজ আদায়ে পুরো ঈদগাহের চারপাশে পোশাকে ও সাদা পোশাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন।  থাকছে তিন স্তরের নিরাপত্তা। জাতীয় ঈদগাহের পূর্বদিকে সর্বসাধারণের জন্য দৃষ্টিনন্দন গেট করা হয়েছে। পশ্চিম দিকে থাকছে ভিআইপিদের গেট। এছাড়া পূর্বদিকে পানির পাম্পসংলগ্ন ছোট গেট রাখা হয়েছে নারীদের জন্য। প্রত্যেককে মেটাল ডিটেক্টর ও আর্চওয়ে নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্যে ঈদগাহে প্রবেশ করতে হবে। পূর্বদিকে ফুটপাতসংলগ্ন ওজুর ব্যবস্থা করা হয়েছে।  নামাজের জন্য মাঠে প্যান্ডেল তৈরির মূল কাজ শেষ হয়েছে। মুসল্লিদের জন্য প্যান্ডেলে ফ্যান লাগানো হচ্ছে। এছাড়া বৃষ্টি হলে যেন নামাজের স্থানে পানি না জমে, সেজন্য নিচু জায়গাগুলোয় মাটি ও বালি ফেলার কাজ করছেন শ্রমিকরা। তবে নামাজ আদায়ের জন্য মূল প্যান্ডেলের ভেতরে জায়নামাজ বিছানোর কাজ হবে চাঁদরাতে। টাঙানো হয়েছে বৃষ্টি নিরোধক ত্রিপল। শেষ হয়েছে ঈদগাহ মাঠের সীমানা প্রাচীর ও আশপাশের গাছে রঙ করার কাজও। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে আশপাশের রাস্তা ও ফুটপাত। ময়দানের সামনের মিনারে রঙ লাগানো শেষ। মাঠের ঘাসও এরই মধ্যে কেটে সমান করা হয়েছে। ঈদগাহ মাঠের ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। নিরাপত্তার দিকটি দেখছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও র্যা পিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যা ব) স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) কন্ট্রোল রুমও রয়েছে। জাতীয় ঈদগাহে জায়নামাজ ও ছাতা ছাড়া অন্য কিছু আনা যাবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিন পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি জানিয়েছেন ডিএমপির পক্ষ থেকে সিসি ক্যামেরা, ডগ স্কোয়াড, বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল, সোয়াত ও সাদা পোশাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা থাকবে। এবারের ঈদগাহ প্রস্তুতের কাজ করছে প্রতিষ্ঠান পিয়ারু অ্যান্ড সন্স ডেকোরেটর। এখানকার একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ৮ রমজান থেকে ঈদ জামাতের জন্য মাঠ প্রস্তুতের কাজ শুরু হয়। দুই শতাধিক কর্মচারী কাজ করেছে এবার। মাঠ প্রস্তুতে ৪৩ হাজার বাঁশ, ৪০০ মোটা পাইপ, ৮০টি গজারি গাছের কাঠ দিয়ে প্যান্ডেল নির্মাণ করা হয়েছে।  আবহাওয়া ভালো থাকলে এক লাখের বেশি মুসল্লী ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবেন এখানে।  পাঁচ হাজার নারী মুসল্লিও ঈদের জামাতে অংশ নিতে পারবেন। তিনি জানান, বৃষ্টির সময় নির্বিঘ্নে ঈদ জামাত আদায়ের লক্ষে ২ লাখ ৭০ হাজার ২৭৭ বর্গফুট আয়তনের ত্রিপল দিয়ে ঈদগাহ ময়দান কাভার করা হবে। ময়দানে সাতশ’ সিলিং ও ১০০টি স্ট্যান্ড ফ্যান লাগানো হয়েছে। এখানে পুরুষদের জন্য ১৪০টি এবং নারীদের জন্য ৫০টি অজুর কল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।  জাতীয় ঈদগাহ এলাকায় একটি ভ্রাম্যমাণ শৌচাগারও  থাকছে। এর আগে বৃহস্পতিবার ঈদগাহ ময়দান পরিদর্শনে এসে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেছেন, জাতীয় ঈদগাহে পানযোগ্য পানি থাকবে। থাকছে পর্যাপ্ত টয়লেট। ঈদগাহে মুসল্লিদের জরুরি স্বাস্থ্য সেবাদানে মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত থাকবে।

     

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ জুন ২০১৮/নূর/এনএ