জাতীয়

‘চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সমৃদ্ধির পথে হাঁটছে বাংলাদেশ’

সংসদ প্রতিবেদক : পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, দেশি-বিদেশি নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে উন্নয়ন, অগ্রগতি আর সমৃদ্ধির পথে হাঁটছে আমাদের আজকের বাংলাদেশ। কারণ, ৪২ বছর স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকায় থাকার পর ২০১৮ সালের ১৭ মার্চ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার প্রাথমিক স্বীকৃতি পেয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ থেকে আজকের এই উত্তরণ, যেখানে রয়েছে এক বন্ধুর পথ পাড়ি দেওয়ার ইতিহাস। সরকারের জনকল্যাণমূলক কৌশলই বিশ্ব অর্থনীতির বর্তমান সময়ে বাংলাদেশকে এই প্রশংসা অর্জনে সহায়তা করেছে। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে মমতাজ বেগমের (মানিকগঞ্জ-২) লিখিত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, বর্তমান অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭.৬৫ শতাংশ প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। এটি দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে আমরা উন্নয়ন বাজেটে সরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেছি। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে বাজেটের আকার ছিল ৬১ হাজার ৫৭ কোটি টাকা, যা ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকায়- যা ৬ গুণের অধিক। তিনি আরো বলেন, অর্থনীতিকে শক্তিশালী ও জনগণের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেছে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে সরকারি বিনিয়োগ ছিল জিডিপির ৫.৫৬ শতাংশ, সেটি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এসে দাঁড়িয়েছে ৮.২২ শতাংশে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ছিল জিডিপি’র ২০.৫৮ শতাংশ। আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে জিডিপি’র ২৩.২৫ শতাংশ। পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান, ২০০৬ সালে মোট রাজস্ব আয় ছিল ৪৪.২০ হাজার কোটি টাকা। ২০১৭ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৪.৮৩ হাজার কোটি টাকা যা ৩ গুণের অধিক। একই সময়কালে কর-রাজস্ব ৩৫.৫০ হাজার কোটি টাকা হতে বেড়ে ১২৪.৪৬ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়ায়। ২০০৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে আমদানি এবং রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে যথাক্রমে ৩.২ ও ৩.৩ গুণ। ২০০৬ সালে আমদানি এবং রপ্তানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১৪.৭ ও ১০.৫ বিলিয়ন ডলার যা ২০১৭ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৪৭.০১ ও ৩৪.৮ বিলিয়ন ডলারে। তিনি জানান, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে ৯.৬ গুণের বেশি। ২০০৬ সালে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩.৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০১৭ সাল শেষে বৃদ্ধি পেয়ে ৩৩.৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। তিনি জানান, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর উন্নয়নবান্ধন ও দারিদ্র্য বিমোচণে সহায়ক বহু প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এতে দারিদ্র্য দিনদিন কমে আসছে। এডিপি বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের মে পর্যন্ত এডিপি (২০১৭-১৮) বাস্তবায়নের আর্থিক অগ্রগতি ৬২.৮১ শতাংশ। ভোলা-৩ আসনের নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের প্রশ্নের জবাবে আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, দেশের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার স্বল্প ও মধ্যমেয়াদী পরিকল্পনার পাশাপাশি দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা বাংলাদেশের প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০১০-২১) প্রণয়ন করেছে। আগামীতে সকল জাতীয় পরিকল্পনা গ্রহণকালে স্বল্পমেয়াদীর পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ জুন ২০১৮/আসাদ/শাহনেওয়াজ