জাতীয়

আত্মপ্রকাশ করল ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের নানা পেশার শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করল নতুন সংগঠন ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’। শনিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এর আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ইমেরিটাস অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ডাকসুর প্রাক্তন সহ-সভাপতি (ভিপি) মাহফুজা খানম, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মো. আফজাল, বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতা শুদ্ধানন্দ মহাথেরো, রামকৃষ্ণ মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী গুরু সেবানন্দ, খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, সাংবাদিক আবেদ খান, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের মহাসচিব সাংবাদিক হারুন হাবীব, ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কথাসাহিত্যিক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, ইসকনের প্রতিনিধি সুখীল দাস ও সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব মামুন আল মাহতাব। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন ডা. নুজহাত চৌধুরী।        সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার মাধ্যমে বাংলাদেশকে তার আজন্ম লক্ষ্য ধর্মনিরপেক্ষতা টিকিয়ে রাখার আহ্বান এসেছে এই সভা থেকে। অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মানুষের মধ্যে বিভাজনের উপাদান তিনটি- ধর্ম, রাজনীতি ও ব্যক্তিস্বার্থ। সেই বিভাজন দূর করার কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। কেবল বায়বীয় বাচনিক উচ্চারণের মাধ্যমে নয়, সক্রিয় কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশকে কক্ষপথে ফিরিয়ে আনতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যে লক্ষ্য নিয়ে স্বাধীন হয়েছে, সেখান থেকে কক্ষচ্যুত হয়েছে। কক্ষচ্যুত বলছি এজন্য যে, সাম্য, মানবিক মর্যাদায় আর সামাজিক ন্যায়বিচার কী আছে? আজকে রাষ্ট্রধর্ম আছে, আবার ধর্মনিরপেক্ষতাও আছে। তেলে আর জলে কখনো মেলে না।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা ছাড়া কোনো গণতান্ত্রিক দেশ চলতে পারে না। রাষ্ট্রের সঙ্গে ধর্মের কোনো সম্পর্ক থাকবে না, রাষ্ট্রধর্ম পালনে বাধা দিবে না এবং ধর্ম পালনে উৎসাহিতও করবে না। গণতান্ত্রিক দেশে এসব শর্ত মানতে হবে।’ পুঁজিবাদী কাঠামোর কারণে এসব শর্ত থেকে বাংলাদেশ অনেক দূরে সরে আছে, এ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘অসুস্থ সমাজে বাস করছি আমরা। হত্যা, ধর্ষণ, গণধর্ষণ হচ্ছে প্রতিনিয়ত, শিশুধর্ষণ হচ্ছে- যেটা পাকিস্তানি হানাদাররাও করেনি। প্রকৃতি ধ্বংস হচ্ছে, বেকারত্ব বাড়ছে। এই অসুখের নাম পুঁজিবাদ।’ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আরো বলেন, ‘মানুষে মানুষে যদি সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে না পারি, ধর্মে ধর্মে সম্প্রীতি আসবে না। হানাহানি বাড়তে থাকবে।’ ইমেরিটাস অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘বারবার ক্ষমতা পরিবর্তন হয়, আর আঘাত গিয়ে পড়ে সংখ্যালঘু মানুষদের ওপরে। সেজন্য মানুষের মধ্যে ঐক্য তৈরি করা জরুরি। মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি হলে সম্প্রীতি রক্ষা করবে না। ব্যক্তিস্বার্থ সব সময় সম্প্রীতিকে নষ্ট করে। সাম্য তো নেই। সমতার কথাও যদি বলি, আমাদেরকে মানুষের মধ্যে বিভেদ দূর করতে হবে।’

     

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ জুলাই ২০১৮/সাওন/রফিক