জাতীয়

রাজধানীর হাটে কোরবানির পশু আনছেন ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঈদুল আজহার আর মাত্র এক সাপ্তাহ বাকি। এরইমধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পশু নিয়ে রাজধানীর হাটগুলোতে আনতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। বুধবার কামরাঙ্গীর চর ও শনির আখরা গরুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ জায়গা দখল করে তাদের গরু সারি কের রেখে পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন। ফরিদপুর থেকে শনির আখরা হাটে এসেছেন জয়নাল হাওলাদার। তিনি ট্রাক থেকে গরু নামাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ভাই, মাত্র আসলাম। ভালো জায়গা দখল করতে হবে, গরু বাঁধতে হবে, তারপরে একটু নিশ্বাস নিতে পারব। এখন খুবই ব্যস্ত আছি। কতটি গরু নিয়ে এসেছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১০০টি গরু নিয়ে এসেছি। সর্বোচ্চ দাম আছে ১ লাখ ৫০ হাজার আর নিচে ৫০ হাজার টাকার গরু আমার কাছে আছে। বুধবার রাজধানীর পশুর হাটগুলোতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে বিক্রি করতে আনা কিছু গরু হাটে সারি বেঁধে রাখা হয়েছে। কোরবানির গরু থাকলেও হাটে কোনো ক্রেতা চোখে পড়েনি। দু-একজন এলেও তারা ছিলেন নিছক দর্শনার্থী। তারা শুধু দাম জেনেই  চলে যাচ্ছেন। প্রথম দিনে তাই ক্রেতা না থাকায় গরু বেচা হচ্ছে না বলেও জানান ব্যবসায়ীরা। তবে তারা আশা করছেন, তাদের মনের মতোই গরু বিক্রি করতে পারবেন। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কেনা-বেচা এখনো শুরু না হলে আগামীকাল থেকে শুরু হবে বলে আশা করছেন তারা। এখনো কোরবানির পশু কেনা-বেচা শুরু না হওয়ার কারণ কী, জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা বলেন, ঢাকার ক্রেতাদের কোরবানির পশু রাখার জায়গা না থাকায় এরা ঈদের আগের দিন কেনে। কুষ্টিয়া থেকে এসেছেন আছমত আলী। তিনি প্রতি বছর কামরাঙ্গীর চরের হাটে কোরবানির সময় গরু নিয়ে আসেন। এবার শনির আখরায় এসেছেন। তিনি এবার ২২টি দেশি গরু নিয়ে এসেছেন। আছমত আলী বলেন, এবার এ হাটে নতুন এসেছি। তাই ভাব বুঝতেছি না। ঈদের আরো এক সপ্তাহ বাকি। এজন্য খদ্দের হয়তো নাই। তবে হাট আগামীকাল থেকে জমতে পারে। আছমত আলীর আনা ২২টি গরুর একেকটির দাম ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বলে তিনি জানিয়েছেন। ফরিদপুর থেকে শনির আখরা গরুর হাটে এসেছেন মজিবুর মোল্লা। তিনি জানান, আজ হাটে এসেছি। এখনো সব গরু খুঁটির সাথে বাঁধা হয় নাই। আমরা আশা করছি, চাহিদামতো দামেই গরু বিক্রি করতে পারব।

 

মজিবুর মোল্লার আনা ৬০টি গরুর একেকটির দাম ৭০ হাজার থেকে শুরু করে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আছে বলে তিনি জানান। সিরাজগঞ্জ থেকে এসেছেন ব্যবসায়ী ইকরাম আলী। এবার কোরবানি উপলক্ষে কামড়াঙ্গীর চরের হাটে ১৫টি গরু নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, ঢাকায় কোরবানির পশু বিক্রি সব সময় একটু দেরিতেই হয়। কেনা-বেচা এখনো শুরু না হলেও আশা করি, আগামীকাল থেকে শুরু হবে। তিনি আরো বলেন, আমার খামার থেকে আনা ১৫টি গরুর দাম ৫৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার পর্যন্ত। গতকাল এসেছি। ক্রেতা তেমন আসছে না। তবে ইদের আরো অনেক সময় আছে। তাই আশায় আছি, ভালো দামে বিক্রি হবে। পাবনা থেকে কামরাঙ্গীর চর হাটে এসছেন মোজাম্মেল হক। তিনি ১২টি গরু নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, আমি গতকাল এসেছি। কালও হাট ক্রেতাশূন্য ছিল। আজও তেমন দেখছি না। কিছু কিছু ক্রেতা আসে, দাম শুনে চলে যায়। তিনি বলেন, আগামী দিন থেকে হাট জমবে ভালো। আমরা আশা করছি, গত বছরের চেয়ে এবার লাভ বেশি হবে। গরু কিনতে আসা ফরিদ উদ্দিন জানান, ঈদের আরো ৭ দিন বাকি। গরু মাত্র হাটে আশা শুরু করেছে। আজ শুধু দেখে যাচ্ছি। ঈদের ২/৩ দিন আগে কিনব। গরু রাখার জায়গা না থাকায় দেরিতে কেনা হয়। আশরাফ আলীও গরু দেখতে হাটে এসেছেন। দাম জানছেন। তিনি বলেন, মাত্র ব্যবসায়ীরা গরু হাটে নিয়ে আসছে। আজ শুধু দেখতে এসেছি, দেখে-শুনে গরু কিনব। শনির আখরার গরুর হাট ইজারাদার মুস্তাক মিয়া সাথে কথা বলে জানা গেছে, ব্যবসায়ী এবং ক্রেতারা যেন ভালোভাবে কোরবানির পশু কেনা-বেচা করতে পারে সেজন্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের হাটে আসা সকল ক্রেতা-বিক্রেতাকে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। আশা করি, এবার হাটের কেনা-বেচা অনেক ভালো হবে। হাটে পর্যাপ্ত পরিমাণে কোরবানির পশু আসছে। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ আগস্ট ২০১৮/সাওন/রফিক