জাতীয়

প্যারিস জলবায়ু চুক্তি মেনে চলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

রাইজিংবিডি ডেস্ক : জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরসনে প্যারিস চুক্তি মেনে চলতে বিশ্বের প্রতি আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বুধবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত প্যারিস চুক্তি সিওপি-২৪ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সদস্যদের উচ্চ পযার্য়ের এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে এ আহ্বান জানান। জাতিসংঘ মহাসচিব এন্টোনিও গুতেরেস চলতি বছরের ডিসেম্বরে পোল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য সিওপি-২৪ এর আগে এই আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। শেখ হাসিনা ২০২০ সাল পূর্ব উচ্চাভিলাস এবং প্যারিস চুক্তি মেনে চলার মাধ্যমে জলবায়ু অর্থায়নের ওপর আলোচনায় গুরুত্ব দিতে জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, আমাদের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে সৃষ্ট সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সহায়তা প্রয়োজন এবং কৃষি, জনস্বাস্থ্য, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মতো ক্ষেত্রে প্রযুক্তি উন্নয়ন ও হস্তান্তর প্রয়োজন। বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের দেশে প্রায় ১৬ কোটি লোক জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের নেওয়া স্বল্প কার্বন কর্মসূচির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই প্রায় ৬০ লাখ সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন করেছে। দরিদ্র্য লোকদের মধ্যে ২০ লাখ উন্নত মানের রান্নার স্টোভ বিতরণ করেছে। তিনি বলেন, তার সরকার জলবায়ু জনিত সমস্যা এবং দুর্যোগ ঝুঁকি কমিয়ে আনতে জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় জিডিপির এক শতাংশ এ খাতে বরাদ্দ দিয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, সরকার জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের ফলে অভিযোজন ও প্রশমনে কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে কৃষি সময়োপযোগী করতে নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ৪৫ কোটি মার্কিন ডলার বরাদ্দ দিয়েছে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি মোকাবেলায় জলবায়ু জনিত পরিস্থিতি সহিঞ্চু বিভিন্ন ধরনের শস্য উদ্ভাবন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার জন্ম হয়েছে বাংলাদেশের একটি নদী বিধৌত এলাকায়। তিনি নদী এলাকায় থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের জীবনের উত্থান-পতন প্রত্যক্ষ করেছেন। বাংলাদেশের জনগনকে অত্যন্ত সাহসী উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে বেঁচে আছে। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে দেশবাসীর নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে চাই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটি দায়িত্বশীল সদস্য দেশ হিসেবে শেখ হাসিনা তার সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ মাথা পিচু আয়ের ক্ষেত্রে কখনোই উন্নয়নশীল দেশের পেছনে থাকবে না। তিনি বলেন, ‘আমাদের অঙ্গীকার হচ্ছে, কার্বন নি:সরণ কমিয়ে আনা, জলবায়ু পরিস্থিতির উন্নতি করা এবং উন্নতমানের শিল্পায়ন গড়ে তোলা।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের জাতীয় বাজেটে এ সকল খাতে বরাদ্দ রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। তথ্যসূত্র : বাসস রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮/এনএ