জাতীয়

পর্যটনকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে উন্নয়ন মেলা শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘উন্নয়নের অভিযাত্রায় অদম্য বাংলাদেশ’ স্লোগানে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাণিজ্য মেলার মাঠে শুরু হয়েছে চতুর্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলা-২০১৮। বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রতিচ্ছবি ‍তুলে ধরতে এতে অংশ নিচ্ছে ৩৩০টি স্টল। একই সঙ্গে দেশের সব জেলা, উপজেলায় হচ্ছে এই উন্নয়ন মেলা। মেলায় বিভিন্ন জেলা বিষয়ে ব্র্যান্ডিং করা হবে। তুলে ধরা হবে দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য। তবে এবারের মেলায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে দেশের বিকাশমান পর্যটন খাতকে। এজন্য আলাদা একটি স্টলের পাশাপাশি জেলা কর্নারগুলোতে পর্যটনবিষয়ক নানা তথ্য দেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মেলার উদ্বোধন করেন। চতুর্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলা উপলক্ষে দুপুরে অর্থনৈতিক সর্ম্পক বিভাগে (ইআরডি) বিদেশি কূটনীতিক ও উন্নয়ন সহযোগীদের নিয়ে এক বিশেষ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য অর্জনে সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা ও কর্মসূচি নিয়েও আলোচনা হয়। সেমিনার শেষে অতিথিরা বাণিজ্য মেলার মাঠে উন্নয়ন মেলা পরিদর্শন করেন। মেলার সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা ঢাকা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মেলার প্রথম দিনে বিকেল ৫টায় ‘বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন দর্শন ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি সেমিনার হবে। সেমিনারে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান। এই সেমিনারসহ এবারের জাতীয় উন্নয়ন মেলায় বিষয়ভিত্তিক তিনটি সেমিনার হবে। আগামীকাল শুক্রবার মেলার দ্বিতীয় দিনে হবে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি বিশেষ উদ্যোগ ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য’ শিরোনামে সেমিনার। এই সেমিনারও হবে বিকেল ৫টায়। এছাড়া, শেষ দিনে রয়েছে ‘শিক্ষিত জাতি সমৃদ্ধ দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার। মেলার বিষয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসক আবু সালেহ মো. ফেরদৌস জানান, এবারের উন্নয়ন মেলায় মোট ৩৩০টি স্টল রয়েছে। এসব স্টলের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০টি, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় ১৯টি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১৬টি, কৃষি মন্ত্রণালয় ১৬টি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১০টি এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ৯টি স্টলে তাদের কর্মকাণ্ড প্রদর্শন করবে। তিনি বলেন, তিন দিনের এ মেলায় আমরা মূলত সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাগুলো জনগণের সামনে উপস্থাপন করব। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য কীভাবে অর্জন করব তা তুলে ধরা হবে। এছাড়া, মেলায় বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিরা তাদের জেলাকে ব্র্যান্ডিং করবেন। তারা তাদের জেলার ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি এবং পর্যটন ও বিনিয়োগ সুবিধার বিষয় তারা তুলে ধরবেন। মেলায় সার্বক্ষণিক ওয়াইফাই, তথ্যকেন্দ্র থাকবে বলে জানান জেলা প্রশাসক। আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান বলেন, মেলায় সরকারি সেবাপ্রতিষ্ঠান, দপ্তর কিছু ‘ওয়ানস্টপ সার্ভিস’ সেবা দেবে, যেমন: বিআরটিএ গাড়ির নিবন্ধন, ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন সেবা দেবে। পাসপোর্ট অধিদপ্তর মেলায় সরাসরি পাসেপোর্ট আবেদন গ্রহণ এবং পাসপোর্ট ফি গ্রহণ করবে। এছাড়া, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের স্টলে ২০১৯ সালে হজে যেতে ইচ্ছুকরা নিবন্ধন করতে পারবেন। এছাড়া, প্রতিদিন সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। মেলা শেষ হবে শনিবার। প্রধানমন্ত্রীর উপহার ‘অনলাইন ডিজিটাল পাঠ সহায়িকা’ : এবারের জাতীয় উন্নয়ন মেলায় মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার্থীদের জন্য থাকছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার 'অনলাইন ডিজিটাল পাঠ সহায়িকা'। সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উন্নয়ন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে ‘অনলাইন ডিজিটাল পাঠ সহায়িকা’র উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন উপজেলার সুবিধাভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের উন্নয়ন মেলায় আমরা একটা বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছি। সেটা হলো- এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য আমার পক্ষ থেকে একটা উপহার- সেটা হচ্ছে পরীক্ষার্থীদের জন্য বাংলা, ইংরেজি ও গণিতে অনলাইন ডিজিটাল পাঠ সহায়িকা। অর্থাৎ অনলাইনে তারা এ বিষয়গুলোতে শিক্ষা নিতে পারবে, সে ব্যবস্থা আমরা করেছি। রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ অক্টোবর ২০১৮/হাসান/রফিক