জাতীয়

‘দেশের উন্নয়নের মূল্যায়ন করুন’

রাইজিংবিডি ডেস্ক : বহুল আলোচিত সংলাপের শুরুতে বর্তমান সরকারের প্রায় ১০ বছরের শাসনকালের মূল্যায়ন করে দেখতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমি এটার বিচারের ভার আপনাদের ওপরই ছেড়ে দিলাম। ৯ বছর ১০ মাস হতে চলল আমরা সরকারে, এই সময়ের মধ্যে দেশের কতটুকু উন্নয়ন করতে পেরেছি, সেটা নিশ্চয় আপনারা বিবেচনা করে দেখবেন। তবে এটুকু বলতে পারি, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ভালো আছে, তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে।’ বৃহস্পতিবার রাতে গণভবনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে সংলাপে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সংলাপের জন্য নির্ধারিত সময় সন্ধ্যা ৭টার আগেই ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টের ২০ সদস্যের প্রতিনিধিদল গণভবনের ব্যাংকোয়েট হলে আসেন। প্রধানমন্ত্রী ৬টা ৫৭ মিনিটে গণভবনের ব্যাংকোয়েট হলে প্রবেশ করেন। আসন গ্রহণ করার পর তিনি উপস্থিত সবার উদ্দেশে সালাম দেন। তিনি বলেন, ‘গণভবন জনগণের ভবন, এখানে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যে অনুষ্ঠানে আপনারা এসেছেন, আমি এটুকু বলতে পারি যে, বাংলাদেশের জন্য আজকে আমরা আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করে যাচ্ছি এবং দীর্ঘ সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রেখেছি। এই দেশটা আমাদের সকলের। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং দেশের সার্বিক উন্নয়ন করা এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। দিন বদলের যে সূচনা আমরা করেছিলাম, দিন বদল হচ্ছে, এটাকে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের এই স্বাধীনতা।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের মহান নেতা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আজকে সে স্বাধীনতার সুফল যেন প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাতে পারি সেটাই একমাত্র লক্ষ্য। সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি।’ প্রধানমন্ত্রী এ সময় মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং সম্ভ্রম হারানো ২ লাখ মা-বোন এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদদের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংলাপে ১৪ দলীয় জোটের ২৩ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। অপরদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। ১৪ দলীয় জোটের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা হচ্ছেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফরউল্লাহ, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু, জেএসডির একাংশের নেতা মইনুদ্দিন খান বাদল, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, ড. মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক ও রমেশ চন্দ্র সেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, আইনবিষয়ক সম্পাদক এস এম রেজাউল করিম। ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধিদলে বিএনপির পাঁচজন নেতা রয়েছেন। তারা হলেন- মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার ও মির্জা আব্বাস। প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন- জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু এবং সুলতান মো. মনসুর প্রমুখ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রশ্নে সংলাপের জন্য ঐক্যফ্রন্টকে ক্ষমতাসীন জোটের সঙ্গে আলোচনায় বসতে আজ সন্ধ্যা ৭টায় গণভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানান। ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম মুখ্য ব্যক্তিত্ব গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন গত ২৮ অক্টোবর সংলাপ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠালে এ বিষয়টি সামনে চলে আসে। তথ্যসূত্র : বাসস রাইজিংবিডি/ঢাকা/১ নভেম্বর ২০১৮/রফিক