জাতীয়

‘সংসদ নির্বাচনের মতো সিটি নির্বাচনেও দায়িত্ব পালন করুন’

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, সংসদ নির্বাচনের গতিধারা অব্যাহত রেখে ঢাকা সিটি নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইটিআই ভবনে আয়োজিত রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের প্রশিক্ষণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। সিইসি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে সিটি করপোরেশন নির্বাচন আমাদের প্রস্তুতি পর্বের একটা ধারাবাহিকতাকে বজায় রেখে চলেছে। কয়েকদিন আগেই আপনারা একটা সুন্দর, স্বার্থক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করেছেন। আপনারা একটি সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য দায়িত্ব পালন করেছেন এবং সেজন্য আপনাদের প্রথমেই অভিবাদন জানাই। নূরুল হুদা বলেন, ‘অনেক পরিশ্রম করে, প্রতিকূলতা, সমালোচনা এবং নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে আপনারা নির্বাচনের উত্তরণ ঘটিয়েছেন। দেশ পরিচালনার জন্য একটা স্বাভাবিক ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রয়েছে।’ সিইসি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘যারা এখন মেয়র বা কাউন্সিলর হবেন তারা এক বছর সময় পাবেন। তারপর আবার ২০২০ সালের এপ্রিল-মে মাসের দিকে নির্বাচন হবে। সেদিনটা যাই থাক না কেনো সেটা ভিন্ন জিনিস। কিন্তু নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম। সেই গুরুত্ব অনুসারে যেভাবে নির্বাচন করা দরকার, যেভাবে নির্বাচন করতে আমরা অভ্যস্ত এবং জাতিকে যেভাবেই নির্বাচন উপহার দিয়েছেন আপনারা।’ ‘শুধু এই জাতীয় সংসদ নির্বাচন নয়। বিভিন্ন পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদে যেভাবে নিষ্ঠার সঙ্গে নির্বাচনগুলো করেছেন, সেভাবেই গুরুত্ব দিয়ে নির্বাচন করতে হবে বলেন সিইসি। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়াদ যাই থাক না কেনো ঢাকা সিটিতে নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে রকম দায়িত্ব আপনারা পালন করেছেন তার জন্য প্রশংসিত হয়েছেন। দেশি-বিদেশি অবজারভার যারা ছিল, তারা এখানে যারা সাংবাদিক দায়িত্ব পালন করেছেন আপনাদের ব্যাপারে কোনো রকমের বিরুপ মন্তব্য করতে পারেনি। আপনাদের মধ্যে স্বচ্ছতা ছিল, নিরপেক্ষতা ছিল, ধৈর্য ছিল এবং সাহসিকতা ছিল সে কারণেই। তিনি বলেন, ‘মাঠে যারা আছেন। তারা এই নির্বাচন কমিশনের আত্মার সঙ্গে জড়িত। আমরা আত্মিকভাবে এর সঙ্গে সম্পর্কিত। সুতরাং এখানে একজনে টোকা দিল, খোঁচা দিল বা ধাক্কা দিল। তাতে আপনারা বিচলিত হবেন না। আপনাদের দায়িত্ব যেভাবে পালন করা দরকার সেভাবে পালন করে যাবেন।’ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন (ইসি) সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি করলেই যে তা সুষ্ঠু হয়ে যাবে-এমন কোনো কথা নেই। জনতার চোখ বলে একটা কথা আছে।’ মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত যেসব কাগজপত্র দেখেছি, তাতে রিটার্নিং কর্মকর্তা থেকে শুরু করে পর্যবেক্ষক পর্যন্ত সবার প্রতিবেদনে দুটি শব্দ অতিমাত্রায় ব্যবহৃত হয়েছে। একটি ‘সন্তোষজনক’ এবং অন্যটি ‘স্বাভাবিক’। তার মানে কি আমাদের নির্বাচন খুবই সন্তোষজনক হয়েছে? এ ক্ষেত্রে পাবলিক পারসেপশন কী, তা নিজেদের কাছেই জিজ্ঞেস করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য করার বিষয়ে আমি সবসময় গুরুত্বারোপ করেছি। এ গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা অবশ্যই দৃশ্যমান হতে হবে। আমাদের ও আপনাদের সবার কর্মকাণ্ড জনতার চোখে পরীক্ষিত হবে। সুতরাং যথার্থ একটি গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করার জন্য আমাদের সবাইকে অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে হবে।’ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনকে ‘নাতিশীতোষ্ণ’ নির্বাচন বলে মন্তব্য করে মাহবুব তালুকদার বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, তাকে আমি নাতিশীতোষ্ণ নির্বাচন বলব। কারণ, এ নির্বাচনের মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার কথা ছিল। উত্তাপ ও উষ্ণতা থাকার কথা ছিল। এখন পর্যন্ত অবস্থার দৃষ্টি মনে হয়, তা হবে না। কেবল কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কিছুটা উষ্ণতা আশা করা যায়। আসন্ন নির্বাচনের শৈত্যপ্রবাহ তাতে কেটে যাবে বলে আমরা মনে করতে পারি। ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী। রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩১ জানুয়ারি ২০১৯/হাসিবুল/সাইফ