জাতীয়

একটি ছাত্রসংগঠনের ভূমিকা বিতর্কিত

নিজস্ব প্রতিবেদকঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর: বহুল আলোচিত বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার রায় দ্রুত কার্যকর দেখতে চায় তার পরিবার। শুধু আটজন নয়, যারা পলাতক রয়েছে তাদেরও ফাঁসি হওয়া দরকার বলে মনে করেন বিশ্বজিতের বড় ভাই উত্তম কুমার। আজ বুধবার দুপুরে আদালত প্রাঙ্গণে রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিশ্বজিতের বড় ভাই উত্তম কুমার রাইজিংবিডিকে দেওয়া সাক্ষাতে এ মন্তব্য করে বলেন, ‘আমাদের পরিবার ভাইয়ের মৃত্যুতে একেবারেই নিঃস্ব হয়ে গেছে। মা-বাবা ভালো করে কথা বলতে পারেন না। ভালোভাবে খাওয়াদাওয়া করেন না। অনেকদিন থেকেই পরিবারের সবাই ভালোভাবে ঘুমাতেও পারেন না।  আজ রায় হয়েছে। এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট, তবে ফাঁসি কার্যকর দ্রুত হলে আমরা আরো খুশি হব।’

তিনি জানান, পলাতক আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তারা প্রায়ই আমাদের পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এতে তারা উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় রয়েছেন বলে জানান উত্তম।

এ সময়ে তিনি আরো বলেন, ‘যতই হুমকিধমকি দেওয়া হোক না কেন, আমরা ন্যায়বিচারের জন্য সত্য কথা বলবই। এমনকি আসামিরা পরিবারের সবাইকে মেরে ফেললেও আমরা ভয় করি না।’

এক পর্যায়ে তিনি কেঁদে ফেলে বলেন, ‘আমরা হিন্দু, তাই আসামিরা আমাদের তোয়াক্কা করে না। সরকারের কাছে আর কী চাইব। সরকার যত কিছুই দিক, ভাইকে তো আর ফেরত দিতে পারবে না। তাই আমরা সরকারের কাছে নিরাপত্তা চাই। আমরা শুধু বাঁচতে চাই।’

এ সময় উপস্থিত সাধারণ লোকজন রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, ফাঁসির রায় যেন উচ্চ আদালতে পরিবর্তন না হয়। এমনকি রাষ্ট্রপতির কাছেও যেন প্রাণভিক্ষা না পায় খুনিরা।’

রায়ের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাধারণ আইনজীবীরাও। বেশির ভাগ আইনজীবী এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, তারাও তাড়াতাড়ি রায় কার্যকর দেখতে চান।

মামলার বাদী সূত্রাপুর থানার এসআই মাহাবুবুল আলম আকন্দ জানান, রায়ে তিনি খুশি হয়েছেন। কিন্তু রায় যত দ্রুত সম্ভব কার্যকর করা দরকার। আর উচ্চ আদালতের কার্যক্রম তাড়াতাড়ি শেষ করলে ভালো হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের বিচারক এ বি এম নিজামুল হক রায়ের চুম্বক অংশ আইনজীবীদের পড়ে শোনান। এ সময় তিনি বলেন, এমন হত্যাকাণ্ড ১৯৭১ সালের পর আর ঘটেনি। হত্যার পর তাকে নিয়ে বিভিন্ন মহল কাদা ছোড়াছুড়ি করেছেন। এমনকি আসামিপক্ষের আইনজীবীরাও তাদের বাঁচানোর জন্য বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন।

এটি জাতির জন্য কলঙ্কজনক উল্লেখ করে বিচারক আরো বলেন, একটি ছাত্রসংগঠনের ভূমিকা এখানে বিতর্কিত। এজন্য ভবিষ্যতে তাদের আরো বেশি সতর্ক হওয়ার দরকার। এ ধরনের হত্যাকাণ্ড জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে বলে রায়ের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেন বিজ্ঞ বিচারক।

 

রাইজিংবিডি/জিসান/সন্তোষ/কর্মকার