জাতীয়

পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ সিন্ডিকেট

নাসির উদ্দিন চৌধুরী : সরবরাহ প্রচুর থাকলেও রমজানের প্রায় এক মাস আগেই দেশি ও বিদেশী পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগে খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ ২৫ টাকা ও ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ২০ করে বিক্রি হলেও এখন তা বিক্রি হচ্ছে দেশি ৩০ টাকা ও বিদেশী ২৫ টাকা দরে। বিশ্লেষকদের মতে, কয়েকদিন পর পর পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাওয়া অযৌক্তিক। একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে নানা অজুহাতে পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছে। দাম বাড়ার বিষয়ে শ্যামবাজার কৃষিপণ্য আরত বণিক সমিতির নেতা হাজি মোহাম্মদ শহিদ বলেন, ‘দাম বাড়ার বিষয়ে আমাদের কোন কিছু করার নেই। ভারত থেকে পেঁয়াজ বেশি দামে কিনতে হচ্ছে আমাদের। আর গাড়ি ভাড়া, লেবার খড়চাও বেড়ে গেছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে এটাও সত্যি যে, কিছু ব্যবসায়ী যারা মোকাম মালিক তারা পেঁয়াজ মজুত করে অনেকদিন রাখার পরে এখন একটু বেশি দামে বিক্রি করছে।’ এদিকে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘মোকামে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে ও হঠাৎ বৃষ্টিতে অনেক পেঁয়াজ পচে যাওয়ার কারণে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়েছে এবং এর ফলে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে খুচরা ব্যবসায়ীদের। বাজারে আসন্ন রোজা উপলক্ষ করে পেঁয়াজের দাম বাড়েনি। তাছাড়া বাজারে পেঁয়াজের দাম সব সময়ই এমন ৫-১০ টাকা উঠানামা করে। রমজান এলেই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে একটি বড় চক্র পেঁয়াজর দাম পাইকারি ও খুচরা বাজারে বাড়িয়ে দেয় এমন অভিযোগ করে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশনের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘একটি সিন্ডিকেট সব সময় অধিক মুনাফার লোভে পণ্যের যথেষ্ট মজুদ থাকা স্বত্ত্বেও বাজারে সঙ্কট সৃষ্টি করে দাম বাড়িয়ে দেয়। সামনে রোজা আসছে আর এই সুযোগ নিয়ে তারা এখন থেকেই দাম বাড়ানো শুরু করে দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বা এটিকে এখনই রোধ করা না হলে রমজানে পেঁয়াজসহ সকল পণ্যের দাম মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কোন আইন প্রয়োগকারি সংস্থা না, তাই আমরা সরকারের কাছে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি যে, এখন থেকে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা বাড়ানো ও অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। এ ছাড়াও পেঁয়াজের দাম কমাতে কৃষককে প্রযুক্তিগত সুবিধা ও স্বল্প মূল্যে ঋণ সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কৃষকদের উন্নতমানের বীজ ও সার সরবরাহ করা গেলে পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা যাবে। এতে বাজার সারাবছর স্থিতিশীল থাকবে বলে ধারণা করা যায়।’ রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা আব্দুল জলিল বলেন, ‘পেঁয়াজের দামের বিষয়ে কিছু বলার নেই। এখন এক দাম আগামীকাল আরেক দাম। সামনে রোজা তাই এখনই পেয়াজ কিনে রেখে দিচ্ছি। তাও কেজিতে ৫ টাকা করে বেশি দিয়ে কিনতে হয়েছে। এই পেঁয়াজই আর ১৫ দিন পরে অনেক বেশি দরে কিনতে হয় কিনা সেটাই আশংকা।’ রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ এপ্রিল ২০১৯/নাসির/শাহনেওয়াজ