জাতীয়

‘জলাবদ্ধতা সহনীয় মাত্রায় কমিয়ে আনতে চাই’

নিজস্ব প্রতিবেদক: ৫০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হলে রাজধানীর ড্রেনেজ ব্যবস্থা সাপোর্ট করে না উল্লেখ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলেছেন, অতিবর্ষণে জলাবদ্ধতা হবে না- এটা শতভাগ বলতে পারবো না। বিশ্বের অনেক শহরে ভারি বর্ষণ হলে জলাবদ্ধতা হয়। এ সমস্যা পৃথিবী জুড়েই। কিন্তু আমরা এটাকে একটা সহনীয় মাত্রায় কমিয়ে আনতে চাই। তিনি বলেন, ‘ভারি বর্ষণ হবে আর সঙ্গে সঙ্গে পানি নেমে যাবে- এটা বলা যাবে না। একেবারে জলাবদ্ধতা নিরসন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’ শনিবার সকালে ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডুরা) আয়োজিত ‘আসন্ন বর্ষায় জলাবদ্ধতা নিরসনে জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা ও নাগরিকদের করণীয়’ শীর্ষক মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এ কথা বলেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ভবনের তৃতীয় তলায় (স্বাধীনতা হল) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে নগরীর জলাবদ্ধতা বিষয়ে মেয়র সাঈদ খোকন গণমাধ্যম কর্মীদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন। সাঈদ খোকন বলেন, ‘ঢাকা শহরে যদি এক ঘণ্টার একটি অতিমাত্রায় বৃষ্টি হয়ে যায় তাহলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে, পানি জমে যাবে। সেই পানি নেমে যাবে কিন্তু নামতে তিন চার ঘণ্টার মত সময় লাগবে। এখান থেকে বের হয়ে আসা খুব একটা সহজ ব্যাপার নয়। যে খালগুলো দিয়ে পানি নেমে যাবে সেই খালগুলোর অনেকখানি দখল হয়ে গেছে। যেখানে গিয়ে পানি পড়বে সেই নিম্নাঞ্চল গুলো ভরাট হয়ে গেছে। স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। যার ফলে পানি নামা খুব কঠিন হয়ে পড়েছে।’ মেয়র বলেন, ‘ভারি বর্ষণজনিত জলাবদ্ধতা নিরসনের দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার। তবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় যদি মনে করে এই দায়িত্ব জনগণের কাছে যাদের জবাবদিহিতা আছে, জনগণের কাছে যারা দায়বদ্ধ তাদের দেবে তাহলে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এই দায়িত্ব আমরা নিতে প্রস্তুত আছি। জলাবদ্ধতা নিরসনে ঢাকা ওয়াসা একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এরই মধ্যে আমরা আমাদের আওতাধীন ড্রেনগুলো পরিষ্কার করে ফেলেছি।’ মেয়র বলেন, ‘নগর সেবায় যেভাবে আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ এসেছে সেভাবে সেবাসংস্থাগুলোর সক্ষমতা বাড়েনি। আমাদের ব্যাপক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। আমরা যখন ড্রেনগুলো পরিষ্কার করি তখন লাখ লাখ বোতল, পলিথিন পাওয়া যায়। এইগুলো ড্রেন ব্লক করে দেয়। ফলে ঠিকমত পানি নামতে পারে না। সাধারণ মানুষ যদি একটু সচেতন হয় এবং এগুলো  যেখানে সেখানে না ফেলে তাহলেই আমাদের জন্য জলাবদ্ধতা নিরসন করা সহজ হবে। আমরা একটা অবৈধ কারখানার বিরুদ্ধে মাত্র ৫ হাজার টাকা জরিমানা করতে পারি, যা অনেকটা হাস্যকর। এর বেশি শাস্তি দেওয়ার বিধান আমাদের নেই। সে কারণে প্রশাসনিক সক্ষমতা বাড়ানো দরকার। প্রশাসনিকভাবে শক্তিশালী করার সময় এসেছে।’ মেয়র সাঈদ খোকন আরও বলেন, ‘আমরা বসে নেই। রাজধানীবাসীকে যেন জলবদ্ধতার ভোগান্তি পোহাতে না হয় সেজন্য আমরাও কাজ করছি। শান্তিনগর, নাজিমুদ্দিন রোডের মতো জায়গায় ৪০ বছর বা তার চেয়েও বেশি সময় ধরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো। এসব এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা কাজ করেছি। এখন আর আগের মতো এসব এলাকায় জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয় না।’ একটি উদাহরণ টেনে মেয়র বলেন, ‘আমি বলতে চাই, যেসব খাল দিয়ে পানি নিষ্কাশন হবে সেই খালগুলোর দায়িত্বে রয়েছে জেলা প্রশাসন। রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছে ঢাকা ওয়াসা। আর এই খালগুলোতে মানুষের ফেলা ময়লা আবর্জনা যেন না যায় সেই বিষয়ে মানুষকে বোঝানো ও সচেতন করার দায়িত্ব হচ্ছে আমাদের। এসব বিষয় যদি একটি সংস্থার অধীনে নিয়ে আসা যায় তাহলে সেবা প্রদান করা বা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা সহজ হবে।’ ডুরার সভাপতি সাংবাদিক মশিউর রহমান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন রুবেল। এছাড়া সভায় সংগঠনের অন্যান্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ এপ্রিল ২০১৯/সাওন/শাহনেওয়াজ