জাতীয়

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে আছে: বাণিজ্যমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : রমজানের আগেও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে আছে বলে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, বাজারমূল্য নিয়ে সার্বিকভাবে আমরা সন্তুষ্ট। নিত্যপণ্যের বাজারে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে আছে। দুই একটি পণ্যের দাম বেড়েছে, কারণ এসব পণ্যের কস্ট অফ প্রোডাক্ট কিছুটা বেড়েছে। মঙ্গলবার সচিবালয়ে ‘জাতীয় ভোক্তা দিবস-২০১৯ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী এভাবেই সন্তোষ প্রকাশ করেন। মন্ত্রী বলেন, ২০১৭ আর ২০১৮ সালে রমজানের সময় প্রতিটি পণ্যের যে দাম ছিল তারচেয়ে এখন দাম অনেকটাই কমেছে। কোনো কোনো জায়গায় দাম বেড়েছে, কিন্তু সব জায়গায় না। যেখানে দাম বাড়ছে সেখানে আমাদের অভিযান চলছে। রমজানে প্রতিদিন মন্ত্রণালয়ের চারটি ও ভোক্তা অধিকারের চারটি দল অভিযান পরিচালনা করবে। এই অভিযানে মেজিস্ট্রেট না হলেও হয়। তারা জরিমানা করতে পারে। তিনি বলেন, পণ্যের বাজারমূল্য বর্তমানে যা আছে তাতে এবার মানুষের ওপর তেমন চাপ পড়বে না। চালের দাম কমেছে, তাই কৃষকদের কাছ থেকে চাপ আসছে। কারণ এক মণ ধান বিক্রি করে এক কেজি মাংস কিনতেই টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে। রমজানে পণ্যের কোনো সংকট থাকবে না উল্লেখ করে টিপু মুনশি বলেন, রমজান মাসকে সামনে রেখে আমরা যথেষ্ট সচেতন আছি। অনিয়ম হলে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালাচ্ছে, জরিমানা করছে। তিনি বলেন, চিনির দাম কিছুটা বাড়তে পারে। কারণ চিনির উৎপাদন মূল্য কিছুটা বেড়েছে। তবে দেশের বাজারে বৃহত্তর ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপ তেলের দাম দুই টাকা কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। ‘রোজাকে সামনে রেখে ছোলার দাম বাড়ার সুযোগ নেই। ছোলা বিভিন্ন ধরনের রয়েছে। কোনো ছোলা ৬০ টাকা আবার কোনো ছোলা একশ টাকা। ছোলা যা দরকার তার চেয়েও বেশি মজুত রয়েছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর চেষ্টা করে, সেটি আমরা দেখছি। চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিও দেখা হচ্ছে, বলেন মন্ত্রী। বাজারে মাংসের দাম নিয়ন্ত্রণের কথা জানিয়ে টিপু মুনশি বলেন, শহরেই মাংসের দাম কিছুটা বেড়েছে, গ্রামে বাড়েনি। আমরা সিটি করপোরেশনের মেয়রদের সাথে বিষয়টি নিয়ে বসব। সবার সাথে বসে মাংসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। যাতে সেটি ঠিক রাখা যায়, সেটি আমরা দেখব। মাংস আগে বাইরে থেকে আসত, এখন তা বন্ধ আছে। যারা পশু পালন করে তারা সেজন্য উৎসাহিত হয়েছে। তিনি বলেন, উৎসবকে কেন্দ্র করে পথে পথে চাঁদাবাজি হয়, এটা বন্ধ করতে হবে, না হলে পণ্যের দামে প্রভাব পড়বে। আমরা পুলিশ ও প্রশাসনকে বলেছি রাস্তার চাঁদাবাজি যেকোনো মূল্যে বন্ধ করতে হবে। আমরা বিষয়টি শক্তভাবে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি। এবারই প্রথম পুলিশকে এটি নিয়ে চিঠি দিয়েছি। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত ‘জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ১৭ হাজার ১৯০টি বাজারে অভিযানের মাধ্যমে ৫৮ হাজার ৬৭৩ প্রতিষ্ঠানকে ৪৬ কোটি ৭৪ লাখ ৫৩ হাজার ৬৫০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এর মধ্যে ৪ হাজার ৮১৫ অভিযোগকারীকে ৮১ লাখ ৩০ হাজার ৩০২ টাকা প্রদান করে অবশিষ্ট ৪৫ কোটি ৯৩ লাখ ২৩ হাজার ৩৪৮ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা রাখা হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জাতীয় পর্যায়ে আগামী ২ মে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব ভোক্ত দিবস উদযাপিত হবে। দিবসটিতে তিন হাজার লোকের উপস্থিতিতে বর্ণাঢ্য র‌্যালির আয়োজন করা হয়েছে। পয়লা মে থেকে ৩ মে ঢাকায় ব্যাপক প্রচারের স্বার্থে বাউল প্রচার সংস্থা কর্তৃক ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর ওপর গান প্রচার করা হবে। রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ এপ্রিল ২০১৯/নঈমুদ্দীন/সাইফ