নিজস্ব প্রতিবেদক: বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান সেলিম হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা। বুধবার (৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান। নিহত মুক্তিযোদ্ধা মুস্তাফিজুর রহমান সেলিমের ছেলে তানভির রহমান তন্ময় বলেন, ‘৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ অনুমানিক রাত ৮ টার দিকে সন্ত্রাসীরা আমার বাবাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। থানায় মামলা করার পর পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত মর্মে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল বাকী আরজু, মোঃ রকি বিশ্বাস, মোঃ রাজিব ও মোঃ লিখন আহমেদ নামের ব্যক্তিদেরকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি অগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করে। তারা এখন হত্যা এবং অগ্নেয়াস্ত্র মামলায় জেল হাজতে আছে । কিন্তু আসল পরিকল্পনাকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসনের কাছে আমার দাবি আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে হুকুমদাতা, পরিকল্পনাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘পরিকল্পনাকারী ও হুকুমদাতাদের গ্রেফতার করা়য় বিলম্ব হচ্ছে। আসামি মোঃ আব্দুল্লাহ আল বাকী আরজু ও মোঃ রকি বিশ্বাস পাকশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এনামুল হক বিশ্বাসের ভাতিজা ও ছেলে। চেয়ারম্যান আমার এবং আমার পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন ও মামলার সাক্ষীদের সামনাসামনি এমনকি মোবাইল ফোনে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে, ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে আমি, আমার পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন ও মামলার সাক্ষীরা সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’ তিনি বলেন, ‘আমার বাবাকে খুন করার প্রধান কারণ রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ করার জন্য পদ্মা নদীর খাস জমি অধিগ্রহণ করলে প্রান্তিক কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় । পরে কৃষকদের ক্ষতিপুরণ বাবদ ২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। আর সে টাকা স্থানীয় চেয়ারম্যান অত্মসাৎ করার চেষ্টা করলে আমার বাবা বাধা দেন। আমার বাবাকে হত্যা করার কিছু দিন আগে চেয়ারম্যান তার বাহিনীকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে এসে বাবকে হুমকি দেয় যে, টাকা উত্তোলনে বাধা দেওয়ার ফল ভালো হবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাবা খুন হওয়ার পরে প্রসাশনসহ সব মহলে গিয়েছি কিন্তু আমার বাবার হত্যার প্রধান মদদদাতা চেয়ারম্যান এনামুলকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। যার ফলে সে প্রতিনিয়ত আমাদের কে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তিনি তার বাবার হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নিহত মুক্তিযোদ্ধা মুস্তাফিজুর রহমান সেলিমের মেয়ে সানজানা রহমান প্রতু এবং ঈশ্বরদী জেলার মুক্তিযোদ্ধাগণ।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ মে ২০১৯/সাওন/শাহনেওয়াজ