জাতীয়

আজ পয়লা আষাঢ়

শাহ মতিন টিপু: আজ পহেলা আষাঢ়। রাজধানীতে ভোরের এক পশলা বৃষ্টি দিয়ে প্রেমময়-উচ্ছল বর্ষা ঋতু শুরু হলো। সকাল থেকেই আকাশ গুরুগম্ভীর। এ যেন আষাঢ়েরই যথার্থ রূপ। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, রোববার থেকে রাজধানীতে টানা বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আরব সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় 'বায়ু'র প্রভাব কেটে গেলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সারা দেশেই বর্ষা প্রভাব বিস্তার করবে বলেও জানাচ্ছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস। আবহাওয়াবিদ খন্দকার হাফিজুর রহমান বলেন, আগামী দিনগুলোতে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ১৬ (জুন) তারিখের পরে ঢাকার তাপমাত্রা কমে যাবে তখন বৃষ্টির প্রবণতাও বেড়ে যাবে। আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড় 'বায়ু'র উঠে গেলেই বর্ষাটা সারা দেশে বিস্তার করবে। এটা অমোঘ সত্যি যে, গ্রীষ্মের খরতাপের ধূসর নাগরিক জীবন আর প্রকৃতিতে প্রাণের স্পন্দন জাগায় বর্ষা। পুষ্প-বৃক্ষে-পত্রপল্লবে নতুন প্রাণের সঞ্চার করে নতুন সুরের বার্তা নিয়ে এসেছে বর্ষা। রবিঠাকুরের ভাষায় ‘ঐ আসে ঐ ঘন গৌরবে নবযৌবন বরষা, শ্যাম গম্ভীর সরসা…’ আষাঢ়ের রিমঝিম বৃষ্টি গ্রীষ্মের ধুলোমলিন জীর্ণতাকে ধুয়ে ফেলে গাঢ় সবুজের সমারোহে প্রকৃতি সাজে পূর্ণতায়। রঙিন হয়ে পুকুর-বিলে ফোটে শাপলা-পদ্ম। কেয়ার বনেও কেতকীর মাতামাতি। বর্ষাবিহীন বাংলাদেশ ভাবাই যায় না। বর্ষা ঋতু তার বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বতন্ত্র। বর্ষার প্রবল বর্ষণে নির্জনে ভালোবাসার সাধ জাগে, চিত্তচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। বর্ষা বাঙালি জীবনে নতুন প্রাণসঞ্চারকারী। বৃষ্টিস্নাত কদম ফুলের সৌন্দর্য্য যে দেখেছে, মুগ্ধ নয়নে চেয়ে না থেকে পারেনি। এর বর্ণনায় পল্লীকবি জসীমউদদীন লিখেছেন- ‘বনের ঝিয়ারি কদম্বশাখে নিঝঝুম নিরালায়, / ছোট ছোট রেণু খুলিয়া দেখিছে, অস্ফুট কলিকায়।’ আষাঢ়ের প্রথম দিনের সকালে রাজধানী ভিজছে স্বস্তির বৃষ্টিতে। দীর্ঘ কয়েকদিনের তাপদাহের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই বর্ষার প্রতীক্ষায় থাকা রাজধানীবাসীর মন রাঙাতেই যেন বৃষ্টির ঝাঁপি নিয়ে হাজির হলো বর্ষা। বৃষ্টি হলে গ্রামের নদী নালা পুকুরে জল জমে থৈ থৈ করে। নদীর তীর উপচে কখনও বা ধেয়ে আসে বন্যা। তখন গ্রামের সাধারণ লোকজনের কষ্টের শেষ থাকে না। তারপরও গ্রীষ্মের তাপদাহ এড়িয়ে বর্ষায় বারিধারায় শান্তি খুঁজে পায় মানুষ। বর্ষা আনন্দ-বেদনার সারথী। সবুজের সমারোহে, মাটিতে নতুন পলির আস্তরণে বর্ষা আনে জীবনেরই বারতা। তাই বর্ষাকে স্বাগতম। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ জুন ২০১৯/ টিপু