জাতীয়

নতুন ঠিকানা পেল শিশু ‘গহীন’

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের শিশু হাসপাতালের সি-ব্লকের একটি বাথরুমে ফেলে যাওয়া নবজাতক ‘গহীন’ নতুন ঠিকানা পেয়েছে।

ঢাকার ২য় অতিরিক্ত সহকারি জজ ও পারিবারিক আদালত-১২ এর বিচারক সাফিয়া শারমিন বৃহস্পতিবার বিকেলে এক নি:সন্তান দম্পতিকে শিশুটিকে দত্তক দেন। তবে ওই দম্পতি নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি।

ওই দম্পতির আইনজীবী মলয় সাহা বলেন, ‘তারা তেজগাঁওয়ের নাখালপাড়ায় থাকেন। স্বামী ব্যবসা করেন আর স্ত্রী গৃহিনী। দুইজনেরই মার্স্টাস ডিগ্রি রয়েছে। মিডিয়ার মাধ্যমে ওই শিশুর খোঁজ পান এই দম্পতি। পরে অভিভাবকত্ব পেতে আদালতের দ্বারস্থ হন।’

মলয় সাহা জানান, শিশুটির অভিভাবকত্ব পেতে মোট আট দম্পতি আবেদন করেছিলেন। সেখান থেকে পরে তিনজনে আসে। পরে এক দম্পতি আর আদালতে আসেননি। বাকি দুই দম্পতির মধ্য থেকে আদালত নাখালপাড়ার দম্পতিকে শিশুর দায়িত্ব দেন।

মলয় সাহা বলেন, ‘বয়স কম বিবেচনা, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও পারিবারিক অবস্থা বিবেচনায় শিশুর অভিভাবকত্ব নির্ধারণ করেন আদালত।’

এর আগে শিশুটিকে নিতে আগ্রহী ওই দম্পতিরা আদালতে সমাজসেবা অধিদপ্ততের মহাপরিচালক ও ছোট সোনামনি নিবাসের উপ-তত্ত্বাবধায়ক ও পরিচালককে বিবাদী করে পৃথক পৃথক আবেদন জমা দিয়েছিলেন।

১৮৯০ সালের গার্ডিয়ান এন্ড ওয়ার্ডস অ্যাক্ট এবং ১৯৮৪ সালের পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশের ৫(২) ধারার বিধান অনুযায়ী নবজাতক শিশু গহীনের শরীরের অভিভাবক ও তত্ত্বাবধায়ক হওয়ার দাবিতে আবেদনগুলো করা হয়।

জানা গেছে, আবেদনকারী দম্পতিরা বাচ্চাটিকে ছোটমনি নিবাসে নেয়ার আগে দত্তক নেওয়ার জন্য হাসপাতালে যান। হাসপাতাল থেকে ছোট সোনামনি নিবাসে নেয়ার পর সেখানেও যান। কিন্তু আইন অনুযায়ী সরাসরি হাসপাতাল বা ছোট সোনামনি নিবাস থেকে গহীনকে দত্তক বা শরীরের অভিভাবক ও তত্ত্বাবধায়ক হওয়ার সুযোগ না থাকায় তারা আদালতে আবেদন করেন।

গত ১৪ মে দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার শিশু হাসপাতালের একটি বাথরুমের ভেতর থেকে ৩ থেকে ৪ দিন বয়সী নবজাতক কন্যা গহীনকে উদ্ধার হয়। পরে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। দুইদিন পর গত ১৬ মে দুপুরে গহীনকে রাজধানীর আজিমপুরের সরকারি ছোটমনি নিবাসে হস্তান্তর করা হয়। শিশুটিকে উদ্ধার করার পর হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার রাসেল মাহমুদ ও তার স্ত্রী পলি বেগম দেখভাল করেন। তারাই শিশুটির নাম রাখেন ‘গহীন’।

হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, গত ১৪ মে দুপুর ১২টার দিকে হন্তদন্ত হয়ে ওই হাসপাতালে ঢুকছেন দুই নারী। এক নারীর হাতে কাপড়ের পুটুলির মতো কিছু দেখা যায়। তিনি বাথরুমে ঢুকে দ্রুত বেরিয়ে আসেন। ঢোকার সময় হাতে যে পুটুলি দেখা যাচ্ছিল, তা বের হওয়ার সময় ছিল না। অন্যজন ছিলেন বোরকা পরা। ধারণা করা হচ্ছে ওই দুজনই শিশু গহীনকে ফেলে যান।

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ জুলাই ২০১৯/মামুন খান/সাজেদ/শাহনেওয়াজ