জাতীয়

ভিপি নুরের যত অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : নিজ শহর পটুয়াখালীতে হামলার সপ্তাহখানেক পর হামলাকারীদের নাম প্রকাশ করলেন নুর।

একই সঙ্গে তিনি ও তার পরিবারে প্রতি নানা হুমকি, চিকিৎসা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হয়রানিসহ নানা অভিযোগ তোলেন নুর।

সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে নুর বলেন, ‘গত ১৪ আগস্ট চরবিশ্বাস থেকে আমার বোনের বাড়ি দশমিনা যাওয়ার পথে উলানিয়া বাজারে পটুয়াখালী-৩ এর সাংসদ এস.এম শাহজাদা সাজুর নির্দেশে গলাচিপা উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিন শাহ এর নেতৃত্বে আমার উপর হামলা করা হয়। এতে অংশ নেয় চেয়ারম্যানের ভাই নুরে আলম, লিটু পেদা, আব্বাস পেদা, পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাইনুল ইসলাম রণো, পৌর শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক, উলানিয়া যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিল, যুবলীগ নেতা ইদ্রিস, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ফরিদ আহসান কচিন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ আসিফ, ছাত্রলীগ নেতা জাহিদ, তূর্যসহ আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের প্রায় শতাধিক নেতা-কর্মী। তারা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে রড, স্টীলের পাইপ ও চাপাতি নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।’

নুর আরো বলেন,  ‘হামলায় প্রায় ২০-২৫ জনকে আহত, ১০ টি মটরসাইকেল ভাংচুর, দুইটি ডিসএলআর ও ৮৯ হাজার টাকা ছিনতাই হয়। আহতদের মধ্যে অমি নিজে, রবিউল, ইব্রাহিম, জাহিদ, রিয়াজসহ  পাঁচজন গুরুতর আহত হই।’

নুর অভিযোগ তোলেন, 'তারা শুধু হামলা করেই ক্ষান্ত হয়নি আমাকে চিকিৎসার মতো মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত করেছে। ডাক্তার সিটি স্ক্যান ও ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করার জন্য বরিশাল মেডিকেলে রেফার করলেও সন্ত্রাসীরা এবং পুলিশ আমাকে জোর করে বাসায় পাঠিয়ে দেয় এবং এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য আমাকে ও আমার পরিবারকে নিয়মিত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।'

নুর বলেন,  ‘গত ৩০ জুন ২০১৮ থেকে এ পর্যন্ত  ভিপি হওয়ার পূর্বে তিনবার (৩০ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে, ২৪ জানুয়ারি বাংলা একাডেমি ও ১১ ই মার্চ রোকেয়া হলে) এবং ভিপি হওয়ার পর  পাঁচবার (১২ মার্চ টিএসসি, ২ এপ্রিল এস.এম হল, ২৫ মে  ব্রাক্ষণবাড়িয়া, ২৬ মে বগুড়া ও ১৪ আগস্ট উলানিয়া) মোট ৮ বার ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের দ্বারা হামলার শিকার হই। প্রতিবার প্রকাশ্যে ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটলেও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি ।বরং কোন কোন ক্ষেত্রে পুলিশের সহযোগিতা চেয়েও পাওয়া যায় নি। পুলিশের নিরব ভূমিকা ছিলো সন্ত্রাসীদের সহায়ক।’

নুর আরো বলেন, ‘সর্বশেষ ১৪ আগস্টের ঘটনার দিন হামলা হতে পারে এমন আশঙ্কায় গলাচিপা পুলিশের সহযোগিতা চাইলেও ওসি কোন ধরণের সহযোগিতা করেনি। এমনকি পুলিশের উপস্থিতিতে সন্ত্রাসীরা আমাদের উপর হামলা চালায় এবং  পুলিশ আমার আত্নী্য-সমর্থকদের গ্রেপ্তারের হুমকিও দেয়। সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে নগ্ন হামলা চালালেও ওসি হামলার কথা অস্বীকার করে।’

নুর প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন,  ‘আমি আমার প্রাণনাশের শঙ্কাবোধ করছি। কিছুদিন আগেও  বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আপনি নিজেই বলেছেন সরকারের সমালোচনা করতে বাধা নেই, দেশ ভিন্ন মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। তাই আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ ভিন্নমতের মানুষের উপর দমন-পীড়ন বন্ধ করে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখতে আপনার দলের নেতা-কর্মী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন। দেশে শাসন প্রতিষ্ঠায় দলীয় প্রভাবমুক্ত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কার্যকর করুন।’

তিনি আরো বলেন,  ‘অন্যায়ভাবে কাউকে হয়রানি করে তার মুখ বন্ধ রাখা যায় না। 'বাঙালি জাতিকে তোমরা দাবায়া রাখতে পারবা না' যা জাতির পিতাই বলে গেছেন।’

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ আগস্ট ২০১৯/ইয়ামিন/জেনিস