জাতীয়

সিনেমা হল আধুনিকায়নে স্বল্প সুদে ঋণ

কেএমএ হাসনাত : দেশের সিনেমা হলগুলো আধুনিকায়ন করতে সরল সুদে ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। কোন খাত থেকে এ ঋণ দেওয়া যায় তা পর্যালোচনা করে একটি প্রতিবেদন দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ জানিয়েছে তথ্য মন্ত্রনালয়।

সম্প্রতি তথ্য মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মিজান-উল আলমের সভাপতিত্বে দেশের সিনেমা হলগুলো আধুনিকায়নের জন্য প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের স্বল্প সুদে দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ দেওয়া সংক্রান্ত একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে কোন খাত থেকে এ ধরনের ঋণ দেওয়া যায় তা পর্যালোচনা করা হয়।

সূত্র জানায়, দেশে চলচ্চিত্রের গৌরবজ্জল ঐতিহ্য রয়েছে। এ বিবেচনায় বর্তমান সরকার ২০১২ সালের ৩ এপ্রিল চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষনা করে। এরপর ২০১৪ সালের ১৮ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথ্য মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি সিনেমা হল মালিকদের ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধকরণ এবং এজন্য সব ধরনের সহযোগিতার ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দেন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর গত ২৬ জুন তথ্য মন্ত্রণালয়ের মাসিক সমন্বয় সভায় তথ্যমন্ত্রী প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের স্বল্প সুদে দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ দেওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে একটি সভা করার জন্য নির্দেশনা দেন। সে নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব(উন্নয়ন) প্রেক্ষাগৃহগুলো আধুনিকায়নের পাশাপাশি মালিকদেরকে স্বল্প সুদে দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ বিভাগের সাথে আলোচনার বিষয়টি তুলে ধরেন।

সভায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ও মধুমিত সিনেমা হলের কর্ণধার ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, দেশের সিনেমা হলগুলো আধুনিকায়নের জন্য ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ/পুনঃনির্মাণসহ আইসিটি খাতে টু-কে প্রজেকটর ও ইলেক্ট্রনিক্স স্ক্রিন স্থাপন এবং সর্বাধনিক সাউন্ড সিস্টেমের পাশাপাশি ই-টিকেটিং ব্যবস্থার প্রবর্তন করতে হবে। সভায় তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রতিটি প্রেক্ষাগৃহের জন্য অবস্থান ভেদে আনুমানিক এক থেকে দুই কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। সিনেমা হল আধুনিকায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অধিকাংশ যন্ত্রপাতি আমদানি করতে হবে। নওশাদ সিনেমা হল ডিজিটাল ও আধুনিকায়নের লক্ষ্যে প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের স্বল্প সুদে দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ দেওয়ার অনুরোধ করেন। একই দাবি জানান বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকার রহমান গুলজার।

বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম-পরিচালক রফিক উল্যা ভূঁইয়া জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদ্যমান এন্টারপ্রিউনারশীপ সাপোর্ট ফান্ড (ইএসএফ) নীতিমালার আওতায় কৃষি ও আইসিটি খাতে উৎপাদনশীলতাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে স্বল্প সুদে দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু যন্ত্রপাতি আমদানি করার জন্য এ নীতিমালার আওতায সিনেমা হল মালিকদের ঋণ দেওয়ার সুযোগ নেই।

তবে ইএসএফ নীতিমালা ছাড়া অন্য কোন নীতিমালার আলোকে সিনেমা হল মালিকদের স্বল্প সুদে দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ দেওয়ার বিষযে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোর সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানানো হবে বলে তিনি সভায় উল্লেখ করেন।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিস্তারিত জানার পর এ বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। কারন বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুনিদ্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ আগস্ট ২০১৯/হাসনাত/নবীন হোসেন