জাতীয়

জিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করেছিলেন এরশাদ : প্রধানমন্ত্রী

সংসদ প্রতিবেদক : সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ৭৫ সালে জাতির পিতা হত্যার পর জেনারেল জিয়া ক্ষমতা দখল করে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে, এরপর এরশাদও তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে। উচ্চ আদালত তাদের এই ক্ষমতা দখলকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। সুতরাং তাদের দুজনের কেউই আর রাষ্ট্রপতি থাকে না, হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী তাদের রাষ্ট্রপতি হিসেবে উল্লেখ করা বৈধ নয়, এটাই বাস্তবতা। কারণ এই একটি রায়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার সুযোগ হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী এরশাদের প্রশংসা করে বলেন, জেনারেল এরশাদের আচার-আচরণ অনেক অমায়িক ছিল। মানুষের প্রতি তার দরদ ছিল। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। পরবর্তীতে জিয়া ক্ষমতায় আসেন। তিনি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিলেও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্নগুলো সংরক্ষণে কোন উদ্যোগই গ্রহণ করেননি। যেটা জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় এসে করেছিলেন।

রোববার জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধী দলের নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে আনীত শোক প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৮১ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিচারপতি আব্দুস সাত্তার প্রার্থী হন। তখন এরশাদ দেশের বাইরে গিয়ে বলেছিলেন সাত্তার তাদের প্রার্থী। আমরা এটার প্রতিবাদ করেছিলাম। তখন খালেদা জিয়া রাজনীতিতে আসেননি। সাত্তার সাহেব ছিলেন তখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। পরবর্তীতে খালেদা জিয়া হঠাৎ করে সাত্তার সাহেবের বিরুদ্ধে একটা বিবৃতি দেন। ৮২ সালে এরশাদের ক্ষমতা দখলের সুযোগ করে দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। বিনিময়ে এরশাদ সাহেব তাকে দুটি বাড়ি এবং নগদ ১০ লাখ টাকাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন। জিয়ার মৃত্যুর পর চট্টগ্রাম আদালতে একটি মামলা হয় কিন্তু বিএনপি কোনদিনও এই মামলা পরিচালনা করেনি। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান হত্যার জন্য খালেদা জিয়া এরশাদকে দায়ী করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন ভন্ডুল করতে বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায়। সে সময় রওশন এরশাদ এগিয়ে আসেন। জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দল এবং অন্যান্য কয়েকটি দল নির্বাচনে অংশ নেয়। অনেক বাধা অতিক্রম করে তখন নির্বাচন করতে আমরা সক্ষম হই, যদিও এই নির্বাচন নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করেন। নির্বাচনে যদি জনগণের অংশ গ্রহণ না থাকতো তাহলে আমরাতো সরকারে টিকে থাকতে পারতাম না। জনগণ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল এবং ভোট দিয়েছিল বলেই আমরা রাষ্ট্র পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি বলেন, ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর আমাকে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত ও চড়াই-উৎড়াই অতিক্রম করতে হয়েছে। এরশাদ প্রথমে মার্শাল ল’ জারি করে, পরে নিজেই ক্ষমতা দখল করে নেয়। রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯/আসাদ/নবীন হোসেন