জাতীয়

বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন চালকরা

রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড়ের সড়কটি ব্যস্ততম সড়কের মধ্যে একটি। প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে হাজার হাজার গাড়ি চলাচল করে। কিন্তু বেশিরভাগ চালক কোনো নিয়মের তোয়াক্কা করেন না। যেমন খুশি তেমন ভাবেই গাড়ি চালাচ্ছেন তারা।

এর ফলে সৃষ্টি হচ্ছে জ্যাম, ঘটছে দুর্ঘটনা। এ জন্য সিংহভাগ দায়ী গণপরিবহণগুলো। চালকরা বাসগুলো যত্রতত্রভাবে পার্কিং করে যাত্রী ওঠা-নামা করাচ্ছেন। একটির পিছনে আর একটি বাস আড়াআড়ি করে রেখে তৈরি করছে জ্যামের।

সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছিল গতবছর। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছিল নানা উদ্যোগ। তৈরি করা হয়েছে সড়ক নিরাপত্তা আইন ২০১৮।

কিন্তু কে শোনে কার কথা। সবাইকে এক প্রকার বৃদ্ধাগুলি দেখিয়ে পুরো সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন বাস চালকরা।

   

নিউমার্কেট থেকে সায়েন্সল্যাব সড়ক ঘুরে দেখা যায়, নির্ধারিত স্থানে গাড়ি না থামিয়েই সড়কের মাঝে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছেন ও নামিয়ে দিচ্ছেন চালক ও হেলপাররা।

এছাড়া লেন বিধি না মেনে ও পাল্লা দিয়ে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর ফলে সড়কে তৈরি হচ্ছে বিশৃঙ্খলা।

নির্ধারিত স্থান ছাড়া বাসের দরজা লাগিয়ে রাখার নিয়ম থাকলেও মানা হচ্ছে না তা। ডেকে ডেকে বাসে যাত্রী তোলা হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশ দেখলেই বন্ধ করে দিচ্ছে দরজা।

এ বিষয়ে রোববার দুপুরে সায়েন্সল্যাব মোড়ের ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী রাইজিংবিডিকে বলেন, সড়কে যারা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে আমরা তাদের কোনরূপ ছাড় দিচ্ছি না। আইনগত সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। যেমন নির্ধারিত স্থান ছাড়া পার্কিং, রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, অবৈধভাবে গাড়ি পার্কিং করার অভিযোগে বিভিন্ন বাসচালকের বিরুদ্ধে জরিমানা করা হচ্ছে। এছাড়া বাস ডাম্পিংও করা হচ্ছে।

   

পাশাপাশি সচেতনতার জন্য সড়কের বিভিন্ন স্থানে সাইনবোর্ড টানানো হয়েছে। তাতে লেখা আছে এখানে বাস থামানো নিষেধ। তারপরও কিছু চালক আইন অমান্য করে বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করাচ্ছে। সকাল থেকে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি মামলাও করা হয়েছে।

অন্যদিকে অনেক চালক বেপরোয়া গতিতে বাস চালায় বা বাস চালানো অবস্থায় ফোনে কথা বলেন। এ সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে।

জুনাইদ রহমান নামে এক পথচারী রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আইন কিভাবে বাস্তবায়ন করতে হয় তা আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বাড়ি ফেরার পর আবার সড়কে আগের অবস্থা ফিরে এসেছে। এ দেশে পরিবর্তন এত সোজা নয়। কারণ আমাদের সদিচ্ছা নেই।’

তিনি আরো বলেন, সময় এসেছে মানুষের মধ্যে শৃঙ্খলাবোধ জাগ্রত করার। সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই ট্রাফিক পুলিশকেও জনবান্ধব হতে হবে। সেইসঙ্গে ট্রাফিক ব্যবস্থা আরো যুগোপযোগী করতে হবে। পার্কিং ব্যবস্থা রাখতে হবে। আমরা প্রত্যেকে দায়িত্বশীল হলে শৃঙ্খলা আসবেই। ঢাকা/নাসির/জেনিস