প্রতিদিন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়। এতে অকালে প্রাণ যাচ্ছে অনেক মানুষের। এসব দুর্ঘটনার প্রধান কারণ সড়কে বিশৃঙ্খলা।
রাজধানীর সড়কগুলোতে যেন আইন ভাঙার প্রতিযোগিতা চলছে। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে ট্রাফিক পুলিশকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
তবে রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর আজমপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। সড়কে যেন বাসচালকরা বিশৃঙ্খলা না করতে পারেন সেজন্য ট্রাফিক পুলিশ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। সেসব পদক্ষেপে সফলতা পাওয়া গেছে বলে জানান এক পুলিশ সদস্য।
উত্তরা থেকে মতিঝিল, নিউমার্কেট, সদরঘাট, গুলিস্তান, কমলাপুর, যাত্রাবাড়ীসহ প্রায় সব রুটেই বাস চলাচল করে। প্রজাপতি, পরিস্থান, আজমেরী, গ্লোরি, ভুঁইয়া, পল্লবী সুপার সার্ভিস, প্রভাতী, বনশ্রী আরো অনেক পরিবহনের বাস এসব রুটে চলে। এসব বাসে দেখা গেছে, আগের তুলনায় ফিটনেস ভালো। অধিকাংশ বাস কোম্পানি নতুন বাস চালাচ্ছে এসব রুটে। যাত্রীদের উন্নত সেবা দিতে এবং সড়কে তাদের অবস্থান ধরে রাখতেই নতুন নতুন বাস দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সকালে দেখা গেছে, অফিস টাইম হওয়ার কারণে প্রচুর লোকের ভিড়। যে যেভাবে পারছেন বাসে ওঠার চেষ্টা করছেন। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশের কারণে রাস্তার মাঝে থেকে বা বাস স্টপেজ ছাড়া কেউ বাসে উঠতে পারছেন না। কোনো বাস যদি স্টপেজ ছাড়া দরজা খোলা রাখে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে সেই বাসের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হচ্ছে। কোনো তদবির বা অনুরোধ শোনা হচ্ছে না।
বিমানবন্দর সড়কে দায়িত্ব পালনরত ট্রাফিক সার্জেন্ট মোহাম্মদ অপু রাইজিংবিডিকে জানান, আমাদের এখানে পুলিশের পাশাপাশি কমিউনিটি পুলিশ এবং আনসার বাহিনীর সদস্যরাও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। সকাল থেকে ভাগে ভাগে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কোনো অনিয়ম আমরা হতে দিচ্ছি না।
সকাল থেকে কতগুলো মামলা হয়েছে এবং কী কী কারণে মামলা দেয়া হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে ১৫-২০টি মামলা দেয়া হয়েছে। রেকারে দিয়েছি ছয়টি বাস। মামলাগুলো দেয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে- অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া, ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকা, লাইন না মেনে ওভারটেক করা। ফিটনেস না থাকায় ছয়টি বাস রেকারে দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সকালে অফিস টাইমে যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে মামলা কম দিয়ে থাকি। তবে অফিস টাইম শেষে যদি কোন ধরনের অনিয়ম পাই, তাহলে তা আমরা ক্ষমা করি না। আপনি দেখুন, সরকারি বিআরটিসি বাসকেও আমরা আটকে রেখেছি অনিয়মের জন্য।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কঠোরভাবে নজর রাখছি, পরিবহনগুলো যেন নির্ধারিত বাস স্টপেজ ছাড়া যাত্রী তুলতে না পারে। আপনি শুনলে অবাক হবেন, প্রতিদিন প্রচুর মামলা দেই আমরা। এত পরিমাণে অনিয়ম যেটা আসলে বলে বোঝাতে পারব না। আমরা তাদের মামলা দেয়ার সময় অনুরোধ করে বলি ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলতে। তারপরও তারা আইন মানতে চায় না।’
জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা আইন মেনে চলুন। আপনাদের দেখে অন্যরা শিখবে। সবাইকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সেটা মানতে হবে।’ ঢাকা/হাসিবুল/হাকিম মাহি/রফিক