জাতীয়

চার লেন হচ্ছে সিলেট-তামাবিল সড়ক

সিলেট হতে তামাবিল পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশে ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেনসহ সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা করেছে সরকার।

সড়কটি চার লেন হলে পর্যটন বিকাশেও সুযোগ সৃষ্টি হবে। যা আর্থ সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র থেকে জানা গেছে, সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়/সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের উদ্যোগে এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে প্রস্তাবিত ‘সিলেট-তামাবিক মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পটির প্রাথমিক বাজেট ধরা হয়েছে তিন হাজার ৭২৯ কোটি ৫৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা। যার মধ্যে সরকারি অর্থায়নে ব্যয় করা হবে ৬২৯ কোটি তিন লাখ ২৯ হাজার টাকা। এ ছাড়া এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) দেবে তিন হাজার ১০০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময় ধরা হয়েছে ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৮ অক্টোবর দুপুর আড়াইটায় পরিকল্পনা বিভাগে এ বিষয়ে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হবে। পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামীমা নার্গিসের সভাপতিত্বে সভায় প্রকল্পটির নানাদিক মূল্যায়ন করা হবে। প্রকল্পটির কোনো সংশোধন করতে হলে সভায় তার পরামর্শ দিয়ে আবারো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

প্রস্তাবিত এই প্রকল্পটি সম্পর্কে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, এই প্রকল্পটির আওতায় সিলেট সদর, দক্ষিণ সুরমা, জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলা থাকবে।

প্রকল্পটি সম্পর্কে সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত এই প্রকল্পটির মাধ্যমে ঢাকা-সিলেট-তামাবিল করিডোরের মাধ্যমে উপ-আঞ্চলিক সংযোগ স্থাপন করা হবে এবং স্থলবন্দর, অর্থনৈতিক অঞ্চল, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে যাতায়াত সহজীকরণ করা হবে।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সিলেট-তামাবিল মহাসড়কটি এশিয়ান হাইওয়ে-১, এশিয়ান হাইওয়ে-২, বিমসটেক করিডোর-৩, সার্ক করিডোর-৫ এর অংশ এবং এটি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক। এই মহাসড়ক উপ-আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের সাথে রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য অঞ্চলের যোগাযোগের প্রধান করিডোর। এই সড়ক উন্নয়নের ফলে যাত্রী ও মালামাল দ্রুত এবং নিরাপদে পরিবহণ করা সহজতর হবে।

সূত্র আরো জানায়, এই সড়কের মাধ্যমে বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের সাথে ভারতের ক্রস বর্ডার সংযোগ স্থাপিত হবে। উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগ বিশেষ করে ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, ভুটান এবং চীনের সাথে যোগাযোগের জন্য ভৌগলিকভাবে বাংলাদেশ কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। ঢাকা হতে সিলেট পর্যন্ত ২২৬ কিলোমিটার মহাসড়ক এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে চার লেনে উন্নীতকরণ করা হবে যার কার্জক্রম চলমান আছে। সিলেট হতে তামাবিল সড়কটি চার লেনে উন্নীত করা হলে বাংলাদেশের উত্তর পূররাঞ্চলের সাথে ভারতের ক্রস বর্ডার সংযোগ স্থাপিত হবে এবং উপ-আঞ্চলিক সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হবে। তাই সিলেট-তামাবিল সড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।

এই প্রকল্পটির আওতায় ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন, ৫৯ দশমিক ৬৮ লাখ ঘন মিটার মাটির কাজ, ৫৬ দশমিক ১৬ কিলোমিটার পেভমেন্ট নির্মাণ, ১ হাজার ৬৩৯ দশমিক ৮৪৯ মিটার ব্রিজ নির্মাণ ( ২১টি), ৫৪টি কালভার্ট নির্মাণ, ১০টি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ, ২৬৩১ দশমিক ১০৯ মিটার স্ট্রাকচার ফাউন্ডেশন, ৫৬ দশমিক ১৬ কিলোমিটার সড়কের কনস্ট্রাকশন সাইট ফ্যাসিলিটিস, ইনসিডেন্টাল, টোল প্লাজা নির্মাণ, এক্সেল লোড ষ্টেশন নির্মাণ, মোটরযান ও যন্ত্রপাতি ক্রয়সহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করা হবে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র থেকে জানা গেছে, প্রস্তাবিত এই প্রকল্পটি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বৈদেশিক সাহায্য প্রাপ্তির সুবিধার্থে বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে। ঢাকা/হাসিবুল/সনি