জাতীয়

‘মুজিব বর্ষে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, তার সরকার ২০২১ সাল নাগাদ সব উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে সারা দেশে ঘরে ঘরে আলো জ্বালাতে সক্ষম হবে।

তিনি বলেন, ‘২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত সময়কে আমরা মুজিব বর্ষ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ, মুজিব বর্ষ উদযাপনের মধ্যে আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম হব। কেউ অন্ধকারে থাকবে না, সব ঘরেই আলো জ্বলবে।’

বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাতটি নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ২৩টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি।

বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো উদ্বোধন এবং উপজেলাগুলোতে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ফলে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা এখন হয়েছে ২২ হাজার ৫৬২ মেগাওয়াট।

পাশাপাশি দেশের ৪৬১টি উপজেলার মধ্যে ২৩৪টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হলো। আরো ১২৭টি উপজেলায় শিগগিরই শতভাগ বিদ্যুতায়ন সম্ভব হবে, যেগুলো এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়া, বাকি ১০০ উপজেলায় আগামী ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত মুজিব বর্ষ উদযাপনকালে বিদ্যুতায়ন করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা একটি লক্ষ্য স্থির করেছি- ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী আমরা উদযাপন করব। জাতির পিতার জন্মদিন ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে এই কর্মসূচি পালন শুরু করে পরবর্তী ২০২১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস পর্যন্ত এক বছর এ কর্মসূচি চলবে। তখন আর একটি ঘরেও অন্ধকার থাকবে না।

তিনি বলেন,‘আলোকিত করাই আমাদের কাজ এবং সেটাই আমরা করে যাচ্ছি। যেখানে বিদ্যুতের গ্রিড লাইন পৌঁছেনি, সেসব প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকা, হাওড় এবং চরাঞ্চলে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে সারা দেশে এই বিদ্যুতায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমাদের যে খরচ হয় এর চেয়ে অনেক কম দামে আমরা তা সরবরাহ করে যাচ্ছি।

বিএনপির আমলে দেশে ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কথা স্মরণ করিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী জানান, ২১ বছর পর সরকার গঠন করে ১৯৯৬ সালে তার সরকার দেশে বিদ্যুৎ পেয়েছিল মাত্র ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট। পরবর্তী ৫ বছরে তা বাড়িয়ে ৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট করে রেখে যান। ২০০১ পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার পরবর্তী ৫ বছরে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন এক মেগাওয়াটও বাড়াতে পারেনি। উপরন্তু, তা কমিয়ে ৩ হাজার ২০০ মেগাওয়াটে নিয়ে আসে।

তিনি জানান, ২০০৯ সালের সরকার গঠনের পর থেকে বিদ্যুৎকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়াসহ একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে তার সরকার বিদ্যুৎকে আজকের পর্যায়ে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে।

ডেপুটি স্পিকার ফজলে বাব্বি মিয়া; প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী; বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মো. শহীদুজ্জামান সরকার গণভবনের অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া, বেলপথ মন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। বিদ্যুৎ বিভাগের জ‌্যেষ্ঠ সচিব আহমেদ কায়কাউস অনুষ্ঠানে দেশের বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন। ঢাকা/পারভেজ/রফিক