জাতীয়

‘বড়মিয়ারা’ ভূমি অফিসের বড় সমস্যা

‘‘ভূমি অফিসগুলোতে বড়মিয়ারা (তহসিলদার)এখন বড় সমস্যা। তাদের বিরুদ্ধে মাঠ পর্যায়ে বিস্তর অভিযোগ আসছে। তাদের জ্বালায় সেবাপ্রার্থী মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।’’

খোদ ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ভূমি মন্ত্রণালয়ের সার্বিক কার্যক্রম পর্যালোচনা বিষয়ক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে ওই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘ভূমি অফিসে অনেকগুলো ভালো এসি-ল্যান্ড এলেও  তহসিলদারের (বড়মিয়া) কারণে ভূমি ব্যবস্থাপনায়  প্রশ্ন উঠছে। কিন্তু তারা (বড়মিয়া)কোনদিন ছোটমিয়া হয়ে যায়, সেই চিন্তায় আছি।’

‘মানুষকে সেবা দেবেন, সেবার মন-মানসিকতা রাখবেন, অহেতুক মানুষকে কষ্ট দেবেন না। এসি-ল্যান্ড, সার্ভেয়ার, কানুনগোদেরও জবাবদিহির আওতায় আনা হয়েছ- বলেন মন্ত্রী।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘কারো অপকর্ম বা দুর্নীতির দায় আমরা নিতে পারবো না। আমি আপনাদের বলবো, ব্যক্তিগত কোনো জিনিস মাথায় রাখবেন না। ব্যক্তিগত জিনিস থেকে বেরিয়ে আসুন। চেয়ারকে কলুষিত করবেন না। আমি ভেরি লাউন্ড অ্যান্ড ক্লিয়ার মেসেজ দিচ্ছি। আমি ভালোভাবে চলি, আমার পুরো দল ভালোভাবে চলবে সেটা দেখতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের যারা আছে, তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী, আপনারা জনগণের জন্য কাজ করবেন, কিন্তু আমরা কি জনগণের জন্য কাজ করছি, জনগণকে কি সেবা দিচ্ছি, না জনগণকে দুর্ভোগ দিচ্ছি, নিজেদের এ বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।’

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, সামনের দিনগুলো আরো কঠিন হবে। স্বচ্ছতা আসছে, সিস্টেম পরিবর্তন হচ্ছে। আমাদের মন্ত্রণালয় দেখেন, আগে যারা কাজ করেছে, তারা মন্ত্রণালয়ে ঢুকলে মন্ত্রণালয় চিনবে না। কাজের ধরন পরিবর্তন হয়েছে। এখন সৎ লোকেরা প্রধান্য পাচ্ছেন। আমাদের সরকার চায় সৎ লোক দিয়ে কাজ করানো। প্রধানমন্ত্রী চান দক্ষ ও সৎ লোক দিয়ে কাজ করাতে। তার জন্য যা যা করা প্রয়োজন, সবই করা হচ্ছে এবং করতে থাকবো।

অভিযোগ আমলে নেয়া হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যখন যে ধরনের অভিযোগ পাচ্ছি, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছি। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আমরা তদন্ত করি। অনেক সময় দেখা যায় যে, তথ্যগুলো ব্যক্তিগত রেষারেষির কারণে। কিন্তু কোনো অভিযোগ এলেই আমরা আনহার্ট করি না, মনোযোগ দেই এবং সে অভিযোগের গভীরে যাই। প্রমানিত হলে ব্যবস্থা নিচ্ছি। ঘুষ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হচ্ছে না।’

জমি অধিগ্রহণ এলাকায় মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে জানিয়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, জমি অধিগ্রহণ এলাকায়  সমস্যা সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় সেটা বেশি। অধিগ্রহণ নিয়ে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। মন্ত্রণালয় থেকে এবিষয়ে বারবার দিকনির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। এসব দিকনির্দেশনা পড়ে কাজ সম্পন্ন করা উচিত।

এসময় ভূমি সচিব মাকসুদুর রহমান পাটওয়ারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাজেদ