জাতীয়

‘জিপিএ-৫ একমাত্র লক্ষ্য হতে পারে না’

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, জিপিএ-৫ জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হতে পারে না। এটা মাথা থেকে বের করে দেয়া উচিত।

মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। চলতি বছরের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) এবং জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফল প্রকাশ উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এই যে জিপিএ-৫ এর উন্মাদনা, এটি দিয়ে আমাদের শিশুদের, আমাদের শিক্ষার্থীদের পুরো শিক্ষাজীবনটাকে একেবারে নিরানন্দ করেছি। তাদের ওপরে অবিশ্বাস্য রকমের চাপ পরিবারের দিক থেকে, বন্ধু-বান্ধবের দিক থেকে। জিপিএ-৫ জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হতে পারে না।’

তিনি বলেন, আমরা এমন শব্দ ব্যবহার না করি, যেটা শুনে শিক্ষার্থীরা কষ্ট পায়। এখন কিন্তু বাচ্চাদের ওপর পড়ার চাপটা অনেক বেশি। আমরা সেটাকে আবার কমিয়ে অনেক বেশি আনন্দময় করার একটা প্রয়াস নিচ্ছি। এখন বাচ্চা, বাবা-মা, শিক্ষকরা অনেক কষ্ট করেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, চতুর্থ বিষয়ের নম্বর গত বছর থেকে যুক্ত হচ্ছে না। আমার মনে হয়, যত কম জিপিএ-৫ নিয়ে কথা বলি, তত আমাদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষাব্যবস্থার জন্য ভালো।

ডা. দীপু মনি বলেন, জিপিএ-৫ এর বিষয়টা আসলে আমাদের মাথা থেকে বের করে দেয়া উচিত। আমাদের শিক্ষার্থী শিখছে কি না, আনন্দের সঙ্গে শিখছে কি না, তাদের সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত করা ক্ষেত্রে আমরা সহযোগিতা করতে পারছি কি না- এ বিষয়গুলোই এখন মুখ্য হওয়া উচিত।

তিনি বলেন, আমরা যে বিষয়গুলো এখন ধারাবাহিক মূল্যায়নে নিয়ে এসেছি, আগে একসময় বাচ্চারা সেই কাজগুলো না করলেও হয়তো নম্বর অনেক সময় যুক্ত হয়ে যেত। এখন সেই সুযোগ থাকছে না। দিন দিন পদ্ধতিগত উন্নয়নগুলো করব। সেখানে ভুল হওয়ার সুযোগ নেই।

আগামী বছরের অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা থেকে গ্রেডিং সিস্টেম জিপিএ-৫ এর পরিবর্তে জিপিএ-৪ কার্যকর করার ইঙ্গিত দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা জিপিএ নিয়ে কাজ করছি। সারা দুনিয়াতে জিপিএ-৪ এর একটা ব্যাপার আছে। আর আমরা ধারাবাহিক মূল্যায়নের দিকে যাচ্ছি। বড় পাবলিক পরীক্ষাগুলো ছাড়া, সমাপনী পরীক্ষাগুলোতে আমরা পুরো গ্রেডিং সিস্টেম তুলে দিয়ে আর কীভাবে মূল্যায়ন করতে পারি, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কিছু দিকনির্দেশনা আছে। আমরা সেগুলো নিয়ে কাজ করছি।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মুনশি সাহাবউদ্দিন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গোলাম ফারুক, আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হকসহ বিভিন্ন বোর্ডের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা/হাসান/রফিক