জাতীয়

‘হঠাৎ করে সবাই এমপি, মন্ত্রী হতে চায়’

সবাই দ্রুত উচ্চ পদ এবং অর্থসম্পদের মালিক হতে চায় বলে আক্ষেপ করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি।

মন্ত্রী বলেন, ‘হঠাৎ করে আমরা সবাই বড় হতে চাই। এই ধরনের উত্থানের প্রচেষ্টা বর্তমান সময়ের জন্য একটা বড় ব্যাধি। অনেকেই শর্টকার্ট উপায়ে তাড়াতাড়ি উত্থান ঘটাতে চায়। আবার কেউ দ্রুততার সাথে চেয়ারম্যান, এমপি, মন্ত্রী হতে চায়।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় গণপূর্ত অধিদপ্তর অডিটোরিয়ামে জাইকা অ‌্যালামনাই অ‌্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত ‘সুশাসন ও উন্নয়ন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে উত্থানের এমন প্রতিযোগিতা চলছে, কেউ গ্রুপ অব কোম্পানিজের মালিক হতে চায়, কেউ কোটি টাকা আয় করতে চায়, হঠাৎ বড় হওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতায় সম্পদ আহরণে সবাই ব্যস্ত। এ প্রবণতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। মাইন্ড সেটআপ পরিবর্তন করতে হবে।’

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন এবং সভাপতিত্ব করেন জাইকা ‌অ‌্যালামনাই অ‌্যসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর সভাপতি ও দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার ড. মোজ্জাম্মেল হক খান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম।

স্বাগত বক্তব্য দেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও জাইকা অ‌্যালামনাই অ‌্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাহফুজ আহমেদ। অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, জাইকা অ‌্যালামনাই অ‌্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর সদস্যবৃন্দ এবং গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলীগণ উপস্থিত ছিলেন।

গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, ‘চাকরিজীবী সবাই সততা অবলম্বন করছেন, তা নয়। আবার সিস্টেম একেবাবে স্বচ্ছ তাও সঠিক নয়। টেন্ডার পদ্ধতি ও ঠিকাদারদের কাজের পদ্ধতির কারণে প্রকৌশলীরা ভয় পেয়ে ফাইলে হাত না দিলে উন্নয়ন আটকে যাবে। তাদের ভয় যুক্তিসঙ্গত।’

তিনি বলেন, ‘আমরা কাজের সিস্টেমকে এখনো আপডেট করতে পারিনি। কাজেই কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি হবেই। তবে দেখা উচিত, এই বিচ্যুতি ইচ্ছাকৃত না প্রয়োজনের তাগিদে। এখন কাজের পদ্ধতি এমন যে, নিয়ম প্রতিপালনের সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার সুযোগ না দিয়ে জোর করলে প্রকৌশলীদের কিছুই করার থাকে না। সিস্টেমের কারণে কাজে ব্যত্যয় ঘটলে সামান্য ত্রুটির জন্য প্রকৌশলীরা যদি হয়রানির শিকার  হন, তাহলে তাদের কর্মোদ্যম ও মানসিকতা ভেঙ্গে যাবে। এ কারণে উন্নয়নের মহাসোপানে অবকাঠামো উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই সিস্টেমের পরিবর্তন করতে হবে।”

অহেতুক তথ্যহীন সংবাদের ভিত্তিতে গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাতে হয়রানি না হন, সে জন্য মন্ত্রী দুদক কমিশনারকে অনুরোধ জানান। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরো বলেন, কেউ অন্যায় ও দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত হলে তাদের ছাড় দিতে রাজি নই। এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। কিন্তু কেউ অন্যায়ভাবে হয়রানির শিকার যেনো না হয়, সেটা দেখতে হবে। দুর্নীতি দমন কমিশনের লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা সকল সহযোগিতা করতে চাই। আমরা স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করি। অভিযুক্তরা অবশ্যই আইনের আওতায় আসবে।” ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাজেদ