জাতীয়

উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান বিল উত্থাপন

স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যান্সিয়াল করপোরেশনসহ স্ব-শাসিত সংস্থাসমূহের উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান বিল- ২০২০ সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বিলটি উত্থাপন করেন। বিলটি উত্থাপনের বিরোধিতা করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম। পরে তার বিরোধিতার প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়।

বিলটি অধিকতর যাচাই-বাচাই করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে বিলটি যাচাই-বাছাই করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়।

আইনের ব্যাখায় বলা হয়েছে, সংস্থাগুলো তাদের পরিচালন ব্যয় যা দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বাৎসরিক ব্যয় হিসেবে প্রয়োজনীয় অর্থ নিজস্ব তহবিলে রেখে দিতে পারবে। আপৎকালীন ব্যয়ের জন্য মোট পরিচালন ব্যয়ের আরও ২৫ শতাংশ এসব প্রতিষ্ঠান রেখে দিতে পারবে।

প্রতিষ্ঠানে বিধি মোতাবেক পেনশন এবং জিপিএস যেগুলো থাকে সেই অর্থও তারা প্রতিষ্ঠানের তহবিলে রেখে দিতে পারবে।

এসব ব্যয় নির্বাহের পরে যে অর্থ তাদের কাছে থাকে তা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে তাদের বিপদে পরার কোনো কারণ নেই।

এ তালিকায় মোট প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৬১টি, শীর্ষে ২৫টি প্রতিষ্ঠান। আর এসব প্রতিষ্ঠানে অলস টাকা পড়ে আছে মোট দুই লাখ ১২ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- জাতীয় কারিকুলাম এবং টেক্সবুক বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড, কারিগরি শিক্ষাবোর্ড, উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, ঢাকা, কুমিল্লা, যশোর, রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও দিনাজপুর, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গাজীপুর, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড), পল্লী উন্নয়ন একাডেমি বগুড়া, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট;

বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, মান নিয়ন্ত্রণ ও পরীক্ষা ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই), ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (বিআইডিএস), কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বার্ক), জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউট, পরমাণু শক্তি কমিশন, কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি), পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ);

খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ), রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ), সেরিকালচার বোর্ড, রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো, সেতু কর্তৃপক্ষ, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ, রাজশাহী), রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা), টেক্সাইল মিলস করপোরেশন (বিটিএমসি), চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন ও সহযোগি প্রতিষ্ঠান, কেমিক্যাল ইন্ড্রাস্ট্রিজ করপোরেশন ও সহযোগি প্রতিষ্ঠান, ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশন ও সহযোগি প্রতিষ্ঠান;

পেট্রোলিয়াম করপোরেশন, প্রেট্রোবাংলা, শিপিং করপোরেশন, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ, জুট মিল করপোরেশন, সড়ক পরিবহণ করপোরেশন (বিটিআরসি) বন শিল্প উন্নয়ন করপোরেশন, মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন, চা বোর্ড, পর্যটন করপোরেশন, আভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি), অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ);

চট্টগ্রাম ওয়াসা, ঢাকা ওয়াসা, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি), চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, বেসামরিক বিমানপরিবহন কর্তৃপক্ষ, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন এবং বাংলাদেশ টেলি রেগুলেটরি কমিশন। 

এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনে উদ্বৃত্ত টাকার পরিমাণ ২১ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা, পেট্রোবাংলায় ১৮ হাজার ২০৪ কোটি টাকা, পিডিপিতে ১৩ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা, চট্টগ্রাম বন্দরে ৯ হাজার ৯১৩ কোটি এবং রাজউকে ৪ হাজার ৩০ কোটি টাকা।

 

ঢাকা/আসাদ/সনি