‘বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন বিল-২০২০’ পাস হয়েছে।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে এ আইনটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে বিলটি পাসের বিরোধীতা করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপি’র সংসদ সদস্যরা। তারা বিলটি পাসের আগে জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব করেন। কিন্তু কণ্ঠভোটে তাদের সেই প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়।
বিলে বলা হয়, বিশেষ পরিস্থিতি যেমন হরতাল, পরিবহন ধর্মঘট, জরুরি অবস্থা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিশ্ব ইজতেমা, মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ এবং অনুরূপ কোনো পরিস্থিতিতে বিশেষ সড়ক পরিবহন সেবা প্রদান করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশের যেকোনো স্থানে এবং বিদেশে বিআরটিসির অফিস, ইউনিট, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মেরামত কারখানা বা ডিপো স্থাপন করার বিধান রাখা হয়েছে।
বিলে ‘বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করোপরেশন’-এর জন্য এক হাজার কোটি টাকা মূলধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই মূলধন ১০০ কোটি সাধারণ শেয়ারে বিভক্ত হবে। ৫১ শতাংশ শেয়ার সরকরের মালিকানায় থাকবে। অবশিষ্ট ৪৫ শতাংশ শেয়ার জনগণের কাছে বিক্রির বিধান রাখা হয়েছে।
এছাড়া বিলে ২৩ সদস্য বিশিষ্ট ‘বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন’ পরিচালনা পরিষদ গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। এতে স্থানীয় সরকার, মন্ত্রিপরিষদ, অর্থ, সড়ক পরিহবন ও মহাসড়ক এবং জননিরাপত্তা বিভাগ, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, ডিটিসিএ, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, শেয়ার হোল্ডারদের প্রতিনিধি এবং প্রশাসনিক বিভাগের প্রতিনিধি থাকবে।
এছাড়া বিলে বিআরটিসি বাস বা ট্রাক দীর্ঘমেয়াদে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে ইজারায় পরিচালনার বিধান রাখা হয়েছে।
বিলটি পাসের যৌক্তিকতা তুলে ধরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘বিআরটিসি একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। সাশ্রয়ী মূল্যে পরিবহন সেবা প্রদান করে বিআরটিসি জনগণের আস্থা অর্জন করেছে।
‘দেশের ৪২৮টি রুট ও ৫টি আন্তর্জাতিক রুটে বিআরটিসি পরিচালিত হচ্ছে। নতুন আরো দুটি আন্তর্জাতিক রুট শিগগিরই চালু হবে। বর্তমানে বিআরটিসিতে ১৮৩০টি বাস রয়েছে। এরমধ্যে ১৩৩২টি সচল। ভারতের লাইন অব ক্রেডিটে ১০২৮টি নতুন বাস ও ৫০০ ট্রাক কেনা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, ১৯৬১ সালে প্রণীত ৩৫টি ধারা সম্বলিত ‘রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন অর্ডিন্যান্স’ যুগোপযোগী করতে ২৯ ধারা সমন্বয়ে ‘বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন আইন ২০১৯’ প্রস্তুত করা হয়। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে আইনটি মন্ত্রিসভা অনুমোদন দেয় এবং গত ২০ জানুয়ারি তা সংসদে উত্থাপন করা হয়।
ঢাকা/আসাদ/সনি