জাতীয়

করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র

বিশ্বজুড়ে দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)।  এরই মধ্যে বিশ্বের ৭৩টি দেশে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে।  করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) দ্বারা আক্রান্ত বা ছড়িয়ে পড়ার উচ্চ ঝুঁকির মুখে থাকা ২৫টি দেশের জন্য ৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।  এসব দেশের তালিকায় বাংলাদেশও রয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ মার্চ) দেশটির আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডির সংক্রামক রোগ বিষয়ক জরুরি রিজার্ভ তহবিল থেকে এ সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।  ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস সূত্রে মঙ্গলবার এ তথ্য জানা গেছে।

দূতাবাস জানায়, যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, অন্যান্য বহুপক্ষীয় প্রতিষ্ঠান এবং ইউএসএআইডি-র কর্মসূচি বাস্তবায়নকারী অংশীদারদের পরিচালিত প্রকল্পের জন্য এ তহবিল দিচ্ছে।  এটি গত ৭ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিশ্রুত ১০ কোটি ডলারের প্রথম কিস্তি।

এ বিষয়ে ইউএসএআইডি'র প্রশাসক এক বিবৃতিতে বলেন, বিশ্বের যে কোনো স্থানের সংক্রামক রোগ সর্বত্রই হুমকির কারণ হয়ে উঠতে পারে বলে আমরা অন্যান্য দাতাদেরও কোভিড-১৯ মোকাবিলার লড়াইয়ে সহায়তা করার আহ্বান জানাই।

'গ্লোবাল হেলথ সিকিউরিটি এজেন্ডার (জিএইচএসএ) আওতায় সংক্রামক রোগের জন্য প্রস্তুত হতে ও তার মোকাবিলায় সহায়তা করতে ইউএসএআইডি এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অন্যান্য সংস্থার ইতোমধ্যেই বিনিয়োগ রয়েছে।  সেই ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে নতুন এ তহবিল নিচের উচ্চ-অগ্রাধিকারমূলক দেশগুলোতে কোভিড-১৯ এর হুমকি মোকাবিলায় সহায়তা করবে।

এর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, অ্যাঙ্গোলা, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, কাজাখস্তান, কেনিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, তাজিকিস্তান, ফিলিপাইন, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান, জাম্বিয়া, জিম্বাবুয়ে, মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, ইথিওপিয়া, কিরগিজ প্রজাতন্ত্র, লাও, মঙ্গোলিয়া, নেপাল, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম।

এদিকে দূতাবাস সূত্র আরো জানায়, ঘোষিত সহায়তা মোট তহবিলের মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কাছে যে অর্থ যাচ্ছে তা বর্তমানে আক্রান্ত বা ঝুঁকিতে থাকা উন্নয়নশীল দেশগুলোর সরকার তাদের গবেষণাগারগুলোকে বিপুলসংখ্যায় কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করা, প্রবেশ পয়েন্টগুলির জন্য একটি জনস্বাস্থ্য বিষয়ক জরুরি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, সক্রিয়ভাবে আক্রান্তের ঘটনা চিহ্নিতকরণ, ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো অসুস্থতার জন্য নির্দিষ্ট ঘটনাভিত্তিক নজরদারি চালু, দ্রুত সাড়া প্রদানকারী টিমকে প্রশিক্ষণ

এবং উপকরণে সজ্জিত করা, আক্রান্তের ঘটনা তদন্ত, সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে যাওয়া লোকজনকে চিহ্নিত এবং কোভিড-১৯ বিষয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণ উপকরণ তৈরি করার কাজে ব্যয় হবে।

অন্যান্য নানা ধরনের অংশীদারের মাধ্যমে যে তহবিল ব্যয় হবে তা ছয়টি বিস্তৃত পরিসরের কাজে সহায়তা করবে।  এর মধ্যে রয়েছে- পরীক্ষাগার শক্তিশালী করা; সংক্রামক রোগ চিহ্নিত করতে নজরদারি এবং তার ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া; এলাকাবাসীর সঙ্গে যোগাযোগ এবং ঝুঁকির বিষয়ে তাদের অবহিত করা, প্রবেশের স্থানে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক স্ক্রিনিং, স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক স্থাপনাগুলোতে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ এবং কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের ঘটনার ব্যবস্থাপনা করা।

গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে উদ্ভূত কোভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাবের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইউএসএআইডি জরুরি আন্তর্জাতিক মজুত থেকে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) অনুদানের জন্য আক্রান্ত দেশগুলোর সরকারের অনুরোধ পর্যালোচনা করে সে বিষয়ে সাড়া দিয়েছে।  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ‘হোয়াইট হাউস করোনাভাইরাস টাস্ক ফোর্স’ এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের ভিত্তিতে এ পিপিই বিতরণ করা হচ্ছে (গগলস, গাউন, মুখের মাস্ক এবং গ্লাভস)।  যা যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আগের দাতব্য অনুদানের পরিপূরক। ঢাকা/হাসান/এসএইচ