জাতীয়

করোনা প্রতিরোধে জেলা-উপজেলায় কমিটি গঠনের নির্দেশনা

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বুধবার জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ‌্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের এক পত্রে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, জাতীয় পর্যায়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর মন্ত্রী ও সচিবদের সমন্বয়ে একটি জাতীয় কমিটি গঠিত হয়েছে।

জেলা সমন্বয় কমিটিতে থাকবেন—জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, পুলিশ সুপার, মেডিক্যাল কলেজ/সদর হাসপাতালের পরিচালক/তত্ত্বাবধায়ক, জেলার সব উপজেলা চেয়ারম‌্যান, সদর পৌরসভার মেয়র, সরকারি বিভাগসমূহের জেলা পর্যায়ের নির্বাহী কর্মকর্তাবৃন্দ।

উপজেলা সমন্বয় কমিটিতে থাকবেন- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ইউএফপিও, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট পৌর মেয়র, সরকারি বিভাগসমূহের উপজেলা পর্যায়ের নির্বাহী কর্মকর্তাবৃন্দ।

জেলা-উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা চেয়ারম্যান যথাক্রমে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটির উপদেষ্টা থাকবেন।

জেলা-উপজেলা সমন্বয় কমিটিগুলোর করণীয়

জেলা-উপজেলা পর্যায়ে মাল্টি সেক্টরাল কমিটিগুলো সক্রিয় করা। পরিস্থিতির চরম পর্যায়ে যেতে পারে, এটা বিবেচনায় রেখে সম্ভাব্য সকল প্রস্তুতি নিয়ে রাখা। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আইসোলেশন হাসপাতাল/ইউনিট নির্ধারণ করে পূর্ণ প্রস্তুতি নিশ্চিত করা।

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গঠিত সব রেসপন্স টিমের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। এলাকায় অবস্থিত বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দরে পরিচালিত স্ক্রিনিং কার্যক্রমের তদারকি করা। জনসচেতনতার উদ্দেশ্যে প্রচার/ প্রচারণা করা, গুজব-বিভ্রান্তি দূর করতে সক্রিয় থাকা। সরকারের অন্যান্য বিভাগের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করা, বিশেষ করে নিরাপত্তা, কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থাপনা ইত্যাদিতে অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও সংস্থাকে দায়িত্ব দেয়া।

কমিটি এখন থেকেই স্থানীয় স্কুল-কলেজসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজন হলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন কেন্দ্র করা যায় কি না তার সম্ভাব্যতা পরীক্ষা করা।

কোনো গ্রাম/পাড়া/মহল্লায় কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব ঘটলে সেখানে সামাজিক (কমিউনিটি) কোয়ারেন্টিন করার প্রস্তুতি এখন থেকেই গ্রহণ করা। বিদেশ থেকে আগত সকল যাত্রীকে স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টিন মেনে চলতে সহায়তা করা।

কোভিড-১৯ সংক্রান্ত যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণে পর্যায় অনুযায়ী আইইডিসিআরে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, সিভিল সার্জন বা ইউএইচএফপিওর সিদ্ধান্ত অবহিত হওয়া।

বিদেশ থেকে আসা সকলকে অবশ‌্যই নিকটস্থ সিভিল সার্জন/উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে রিপোর্ট করতে হবে। রিপোর্টকালীন কিছু বিষয় রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করতে হবে—বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের তারিখ, সর্বশেষ ভ্রমণকৃত দেশ, দেশের সংখ্যা একাধিক হলে বিগত ১৪ দিনে যে সকল দেশ ভ্রমণ করেছেন সে সকল দেশের নাম, ভ্রমণের সময়কাল, দেশে অবস্থানকালীন ঠিকানা, ফোন নম্বর, মোবাইল ফোন নম্বর, দেশে প্রত্যাবর্তনের পরে দেশে অন্য কোনো স্থানে/জেলায় ভ্রমণ করে থাকলে সে স্থানের নাম/ঠিকানা।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা উপজেলা চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের নিয়ে সভা করে এ বিষয়ে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবেন ও এ সংক্রান্ত তথ্য স্থানীয় কেবল টিভি অপারেটরদের মাধ্যমে কেবল টিভিতে প্রচার ও স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

কাউকে কোভিড-১৯ আক্রান্ত বলে সন্দেহ হলে পরিচালক/ সিভিল সার্জন/ তত্ত্বাবধায়ক/ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তাৎক্ষণিকভাবে আইইডিসিআরকে অবহিত করবেন। ঢাকা/সাওন/রফিক