জাতীয়

প্রবীণ উন্নয়ন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করবে সরকার

দেশের এক কোটি ত্রিশ লাখ জ্যেষ্ঠ নাগরিকের (সিনিয়র সিটিজেন) অধিকার বাস্তবায়নে প্রবীণ উন্নয়ন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করবে সরকার। এ লক্ষে ‘প্রবীণ উন্নয়ন ফাউন্ডেশন আইন-২০২০’ এর একটি খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১০ মার্চ) সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের সভাপতিত্বে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এই আইনের খসড়া চূড়ান্ত হয়।

আইনের প্রস্তাবনায় প্রবীণ নাগরিকদের সমাজ ও সভ্যতার অভিভাবক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তাদের মর্যাদাপূর্ণ, দারিদ্র্যমুক্ত, কর্মময়, সুস্বাস্থ্য ও নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করতে এ আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আইনের ৩ অনুচ্ছেদে একটি প্রবীণবান্ধব ‘প্রবীণ উন্নয়ন ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকারের কথাও বলা হয়েছে।

আইনের ২ নম্বর অনুচ্ছেদের (ক) উপানুচ্ছেদানুযায়ী বিদ্যমান আইনে বা অন্য কোথাও যা-ই থাক না কেন, ‘প্রবীণ’ বলতে ৬৫ বছর এবং তদুধ্র্ব বয়সী জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের বোঝানো হয়েছে। ৪ অনুচ্ছেদানুযায়ী এ ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় এবং যেকোনো স্থানে শাখা স্থাপনের কথা বলা হয়েছে।

আইনটি জাতীয় সংসদে পাশের পর যথারীতি কার্যকর হবে বলে সভায় জানানো হয়। সভায় গুরুত্বপূর্ণ এ আইনটি চলতি মুজিববর্ষের মধ্যেই পাস ও কার্যকরের প্রয়োজনের ওপর জোর দেওয়া হয়।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা- ২০১৩’ এর গেজেট জারি করে সরকার। এই নীতিমালার বাস্তবায়ন কৌশলে বলা রয়েছে, প্রবীণ ব্যক্তিদের প্রতি অবহেলা ও নীপিড়ন থেকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনে উপযুক্ত সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করে সরকার।

নীতিমালায় প্রবীণদের বিশেষ কল্যাণ কার্যক্রমে বলা আছে, প্রবীণদের জন্য কল্যাণমূলক কার্যক্রম গ্রহণ এবং সুবিধা বঞ্চিত অবহেলিত জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের প্রতিষ্ঠানিক সেবা নিশ্চিত করতে হবে।

আ্ইনের আওতায় যে ফাউন্ডেশনের কথা বলা হয়েছে, জাতীয় বাজেটে প্রবীণদের জন্য বরাদ্দ রাখারও নির্দেশনা থাকবে আইনে। এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে পল্লী ও শহর এলাকায় স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদী সঞ্চয় প্রকল্প চালু, যাতায়াত ও যোগাযোগ সুবিধা, স্বাস্থ্য ও বয়সের উপযুক্ততা বিবেচনা করে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অসচ্ছলদের পোষ্য/নির্ভরশীলদের নিয়ম অনুযায়ী দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচিতেও অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

প্রবীণ উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সমাজ ও পরিবারে প্রবীণরা যাতে অবহেলা, বৈষম্য ও নিপীড়নের শিকার না হন, সেজন্য আইনগত সুবিধা পাওয়ার বিধান থাকবে ফাউন্ডেশন আইনে। প্রবীণরা তাদের সম্পত্তিভোগের অধিকার নিশ্চিত করতে পারবেন এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে।

এছাড়া ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে প্রবীণদের স্বাস্থ্যসেবা, সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালেও বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হেলথ অ্যাকসেস ভাউচার এবং হেলথ সার্ভিস কার্ড চালু করা হবে, প্রবীণদের স্বীকৃতি হিসেবে তাদের পরিচয়পত্র দেওয়ার বিষয়টিও থাকবে এ আইনে।

 

ঢাকা/হাসান/এসএম