জাতীয়

এক্সপ্রেসওয়েসহ প্রকল্পগুলো মুজিববর্ষের উপহার: প্রধানমন্ত্রী

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গাসহ বেশ কয়েকটি প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যান চলাচলের জন্য নবনির্মিত ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দৃষ্টিনন্দন এই এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেন তিনি।  এর মধ্য দিয়ে যাতায়াতের সময় কয়েক ঘণ্টা কমিয়ে রাজধানীর সঙ্গে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগে নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।

এসময় তিনি তৃতীয় কর্ণফুলী সেতুনির্মাণ (সংশোধিত) প্রকল্পের আওতায় ৬ লেন বিশিষ্ট ৮ কিলোমিটার তৃতীয় কর্ণফুলী (শাহ আমানত সেতু) সেতু এপ্রোচ সড়ক এবং ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের আওতায় খুলনা, বরিশাল ও গোপালগঞ্জ সড়ক জোনে নির্মিত ২৫টি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড উদ্বোধন করেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও সেনাবাহিনী প্রধান আজিজ আহমেদ এসময় উপস্থিত ছিলেন।  অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে।  শুধু সড়ক নয়, নৌ, বিমান ও রেলপথেরও আমরা উন্নয়ন করছি।  সারাদেশের মানুষ আজ সড়ক নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে।  আজ যে প্রকল্পগুলো উদ্বোধন করা হলো তা মুজিববর্ষের উপহার।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষগুলো এতদিন অবহেলার মধ্যে ছিল।  ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জ যেতে ২৪ ঘণ্টা সময় লাগত।  এ ছাড়া বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন উন্নয়ন ছিল না।  আজ সে যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিবর্তন সাধিত হয়েছে, এসব এলাকায় এখন দ্রুত উন্নয়ন হবে।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন, এ পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংক আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিল।  আমি সেটা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করেছিলাম।  কানাডার কোর্টে প্রমাণ হয়, সেখানে কোনো দুর্নীতি হয়নি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ক্ষমতায় আসার পর দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করেছি।  ঢাকা থেকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত যাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে মানুষ চলাচল করতে পারে, সে জন্য সড়ক, ব্রিজ, কালভার্ট, আন্ডারপাস, ওভারপাস নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে।  এ ধরনের যোগযোগ ব্যবস্থার ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ উপকৃত হচ্ছে।  আমরা যোগযোগ ব্যবস্থার আধুনিক ও বৈপ্লবিক পরিবর্তন করতে চাই।  সারাদেশ এখন সড়ক নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে নির্বিঘ্নে যান চলাচল নিশ্চিত করার জন্য দুটি সার্ভিস লেন, পাঁচটি ফ্লাইওভার, ১৯টি আন্ডারপাস, দুটি ইন্টারচেঞ্জ, চারটি রেলওয়ে ওভারব্রিজ, চারটি বড় সেতু, ২৫টি ছোট সেতু ও ৫৪টি কালভার্ট নিয়ে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণ করা হয়েছে।

দ্রুতগতির এ সুপার মহাসড়ক ঢাকা শহরের সঙ্গে পুরো খুলনা ও বরিশাল এবং ঢাকা বিভাগের কিছু অংশের যোগাযোগে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির মাধ্যমে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে রাখবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

মুন্সীগঞ্জসহ দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২২ জেলার মানুষ সরাসরি এ আধুনিক এক্সপ্রেসওয়ে থেকে উপকৃত হবে।  আর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু হয়ে যাওয়ার পর যাত্রীরা এক্সপ্রেসওয়েটির পুরো সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।  তখন এক্সপ্রেসওয়ের দুই অংশ- যাত্রাবাড়ী মোড় থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার ও পাঁচ্চর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার যুক্ত হয়ে যাবে।

 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসএম