জাতীয়

কারখানা বন্ধ নয়, শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা জোরদার হবে

করোনা কারণে কলকারখানা বন্ধ না করে রেশনিং ব্যবস্থা চালু এবং শ্রমিকদের স্বাস্থ‌্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলো, তা পুরণের আশ্বাস দিয়েছে শ্রম মন্ত্রণালয়।

রোববার রাজধানীর বিজয় সরণির শ্রম ভবনের সম্মেলন কক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের কাছে এ দাবি জানান শ্রমিক নেতারা।

এর আগে প্রতিমন্ত্রী শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) সঙ্গে করোনাভাইরাস সংক্রমণ সমস্যা মোকাবেলায় শিল্প কলকারখানার পরিস্থিতি সম্পর্কে জরুরি বৈঠক করেন। শ্রমিকদের জন্য থোক বরাদ্দ, কলকারখানার ভিতরে-বাইরে স্বাস্থ্য বিষয়ক নিরাপত্তা জোরদার, প্রতিটি কারখানায় ডাক্তারের ব্যবস্থা, শ্রমঘন এলাকাভিত্তিক কোয়ারেন্টিন এবং প্রয়োজনে সরকার-মালিক-শ্রমিক এবং ক্রেতাগোষ্ঠীর সঙ্গে বৈঠকের দাবি করেন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।

সভাপতির বক্তব্যে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রমিকদের নিরাপত্তাই সরকারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সরকার স্বাস্থ্য সচেতনতার ওপর জোর দিচ্ছে। শ্রমিক নেতৃবৃন্দের পরামর্শ সরকার ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। আমাদের সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। প্রয়োজনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিল এবং কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে শ্রমিকদের সহায়তা দেয়া হবে।’

সভায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আলী আজম করোনাভাইরাসের আতঙ্ক নিয়ে কারখানাগুলোতে যাতে কোন ধরনের শ্রম অসন্তোষ না দেখা দেয়, শ্রমিক নেতৃবৃন্দকে সে বিষয়ে আরও উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান। একইসাথে শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

তিনি বলেন, মালিকগণ স্বাস্থ্যবিধি সিডি আকারে প্রতিটি কারখানায় প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মন্টু বলেন, শ্রমিকদের কার‌খানায় উৎপাদন বন্ধ না করে শ্রমিকদের করোনা সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সাতদিন, দশদিন বন্ধ করলেই সমাধান হবে না। গত কয়েকদিনে দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে গেছে। অতিদ্রুত রেশনিংয়ের প্রস্তাব দেন তিনি।

আলোচনা সভায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. রেজাউল হক, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর-এর মহাপরিদর্শক শিবনাথ রায়, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ কে এম মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন খান, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন, বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশনের সভাপতি শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর, জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সভাপতি চৌধুরি আশিকুল আলম, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের পদস্থ কর্মকর্তাগণ এবং স্কপের আওতাধীন বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

পরে গার্মেন্টসের ৭২টি শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিভিন্ন গার্মেন্টস শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মতামত নেওয়া হয়, যেখানে অধিকাংশ নেতৃবৃন্দ কারখানা চালু রেখে করোনা প্রতিরোধে শ্রমিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে সুষ্ঠু মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করার দাবি জানান। ঢাকা/আসাদ/সাজেদ