জাতীয়

\`না খাইয়া এমনিতেই মইরা যামু\`

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস বাংলাদেশেও সংক্রমণের কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সব স্থানে সব ধরনের গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার।

তাই নিষেধাজ্ঞার শুরু থেকে রাজধানীর রাস্তাঘাটে কোনো ধরনের গণপরিবহন, রিকশা, প্রাইভেট গাড়ি চলাচল করতে দেখা যায়নি। তবে সোমবার (৩০ মার্চ) বেশ কিছু রিকশা ও প্রাউভেট গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে।

কথা হয় রাজধানী ধানমন্ডির রিকশাচালক মোহাম্মদ হান্নান মিয়ার সঙ্গে। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘তিন-চার দিন ধইরা রিকশা চালাইনা। ঘরে চাল-তেল-তরকারি নাই। রিকশা না চালাইলে কি খামু? করোনার ভয়ে যদি ঘরে বইসা থাকি তাহলে তো না খাইয়া এমনিতেই মইরা যামু। করোনায় আর মরা লাগবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘এতোদিন রাস্তায় কোনো মানুষ বের না হওয়ার রিকশা নিয়ে বের হই নাই। কিন্তু আরতো পারছিনা। ঘরে রান্না করার মতো কিছু নাই। কয়দিন এভাবে বসে থেকে চলা যায়। আমারাতো দিন আনি দিন খাই।’

অন্য এক রিকশাচালক আকবর মিয়া বলেন, ‘প্রায় ছয় বছর ধরে রিকশা চালাচ্ছি। আমার রোজগারেই সংসার চলে। রিকশা চালিয়ে যা টাকা জমিয়েছিলাম তার সব শেষ। এখন তাই বাধ্য হয়েই আজ রিকশা নিয়ে বের হয়েছি।’

যাত্রী হয় কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘মেইন রাস্তায় আমি বের হইনা। মেইন রাস্তায় গেলে পুলিশ ধরে। তাই অলি গলির বা মহল্লার রাস্তায় রিকশা চালাচ্ছি। এই সকল যায়গায় কিছু মানুষ বাজার করার জন্য বের হয়। তাই কিছু যাত্রী হচ্ছে। গতকালও বের হয়েছিলাম। ৪০০ টাকার মতো আয় করতে পেরেছি।’

এ বিষয়ে ধানমন্ডি ১৫ নম্বর স্টাফ কোয়ার্টার মোড়ে দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা জালাল খান বলেন, ‘গতকাল এবং আজ কিছু রিকশা চলাচল দেখতে পাচ্ছি। আমরা তাদের নিষেধ করেছি রিকশা চালাতে। কিন্তু এটাও বুঝি যে ওরা গরীব। রিকশা না চালালে কী খাবে? তাই তেমন বাধা দিচ্ছি না। তবে একজনের বেশি লোক রিকশায় উঠতে দিচ্ছি না। আমাদের সামনে যতক্ষণ রিকশা থাকে ততক্ষণ একজন যাত্রী নিয়েই চালাচ্ছে।’ ঢাকা/হাসিবুল/জেনিস