জাতীয়

সরকারি ছুটি বাড়তে পারে

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারি ছুটি আরো বাড়তে পারে। পরিস্থিতি শূন্যের কোটায় না আসা পর্যন্ত, কিংবা করোনা সংক্রমণ রোধ ও মানুষের ব্যাপক মৃত্যুঝুঁকি থেকে সুরক্ষা না হওয়া পর্যন্ত ছুটি বাড়াতে পারে সরকার। 

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে ছুটি বাড়ানো হবে কিনা—প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর নির্ভর করছে।

জানা গেছে, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসকদের প্রয়োজনীয় দিক—নির্দেশনা দেবেন। এতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার সদস্যরাও যুক্ত হবেন।  মাঠ পর্যায়ে করোনাভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতি ওঠে আসার পাশাপাশি এই কনফারেন্সে সরকারি ছুটির বিষয়টি আলোচনা হতে পারে।

সূত্র জানায়, করোনা সংক্রমণ রোধে পরিস্থিতি বিবেচনা করে রাষ্ট্রপতি, সেনাপ্রধান, মন্ত্রিসভার সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগসহ প্রায় সব মহলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়।  

এ সময়ে (২৬ মার্চ-৪ এপ্রিল)  করোনা সংক্রমণ পুরোপুরি রোধ না হলে ছুটি আরো এক সপ্তাহ বাড়ানো হতে পারে। কারণ ছুটি শেষে আবারো সবখানে মানুষের জমায়েত হবে। এতে করোনার ঝুঁকি থাকবে। তাই পরিস্থিতি বিবেচনায় আরো এক সপ্তাহ  সরকারি ছুটির ঘোষণা আসতে পারে বলে জানা গেছে।

সরকারি ছুটি বাড়ানো হতে পারে— এমন ইঙ্গিত দিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, সবকিছুই প্রধানমন্ত্রীর ওপর নির্ভর করছে। এখনো এ বিষয়ে কোনও নির্দেশনা আসেনি।  তবে আমার মনে হয় ছুটি বাড়তে পারে। কারণ করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকির বিষয়টি একেবারেই শেষ হয়ে যায়নি। এটি শূন্যের কোটায় না আসা পর্যন্ত পরিস্থিতি বিবেচনায় ছুটি বাড়ানো হতেও পারে।

এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন জানান, এখনো কোনও নির্দেশনা আসেনি। নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না। এটি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার বলেও জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে ছুটি বাড়ানো হতে পারে। তবে করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী।

ছুটি বাড়বে কিনা- জানতে চাইলে রোববার (২৯ মার্চ) ভিডিও প্রেস কনফারেন্সে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের বলেন, আমরা পর্যবেক্ষণ করবো।  আপনারাও পর্যবেক্ষণ করবেন।  দেশবাসী করবেন। প্রধানমন্ত্রী পর্যবেক্ষণ করবেন।  যদি ১০ দিনে দেশের ও পৃথিবীর পরিস্থিতি একটা সহনশীল অবস্থায় চলে আসে তখন এক ধরনের চিন্তা হবে। যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয় তাহলে আমরা প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দেবো পরিস্থিতি দেখে পদক্ষেপ নেওয়ার। প্রধানমন্ত্রী যদি পরিস্থিতি দেখে ছুটি বাড়াতে চান তো বাড়াবেন, পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে চিন্তা-ভাবনা করে তিনি নির্দেশ দেবেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম জানান, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে ছুটি কিছুদিন বাড়ানোর জন্য আমাদের আবেদন থাকবে। যাতে আরো নিশ্চিত হতে পারি এবং ঝুঁকিমুক্ত থাকতে পারি।

দেশে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ২৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

নঈমুদ্দীন/সাইফ/নাসিম