জাতীয়

কোয়ারেন্টাইনে না থাকলে পরিণতি ভয়াবহ হবে

কোভিড-১৯ থেকে বাঁচতে সবাইকে বারবার হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী সেনা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মানুষজনকে ঘরে রাখতে একযোগে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এর মধ্যেও সম্প্রতি গার্মেন্টস কর্মীদের ব্যাপকহারে ঢাকায় প্রবেশের ফলে বেশ সমালোচনাও হয়েছে। কারণ যেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সবাইকে ঘরে থাকতে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্ভূদ্ধ করা হচ্ছে, সেখানে এতো লোকের সমাগম করোনাভাইরাস ব্যাপকহারে ছড়ানো ঝুঁকি অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়।

এখন পর্যন্ত প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে যতজন আক্রান্ত হয়েছে তার বেশিরভাগই রাজধানীতে বসবাস করে।

ইতোমধ্যে রাজধানীর ২৯ এলাকায় ভাইরাসটি সংক্রমিত হয়েছে বলে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) থেকে সংবাদ মাধ্যমকে জানানো হয়েছে।

সোমবার পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু ও ১২৩ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর জানিয়েছে সংস্থাটি। ঢাকা মহানগরীতে ৬৪ জন, নারায়ণগঞ্জে ২৩ জন, মাদারীপুরে ১১ জন, গাইবান্ধায় পাঁচ জন, চট্টগ্রামে দুই জন, চুয়াডাঙ্গা, কুমিল্লা, কক্সবাজার, গাজীপুর, মৌলভীবাজার, নরসিংদী, রংপুর, শরীয়তপুর ও সিলেটে একজন করে। আর ঢাকা মহানগরের বাইরে চারজন, জামালপুরে তিনজনের তথ‌্য পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. ইকবাল কবির রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘যদি কেউ বিদেশফেরত হয়ে থাকেন তাহলে ১৪ দিন পর্যন্ত নিজেকে সবার থেকে আলাদা করে রাখতে হবে, মানে সেলফ কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। একই সঙ্গে এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকারের নির্দেশে মেনে প্রত্যককে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। মূলত এসব করা হয়নি বলেই ভাইরাসটি দ্রুত ছড়াচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন।

প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ করোনাভাইরাসে সতর্কতা প্রসঙ্গে বলেন, ‘চিকিৎসায়  করোনাভাইরাসটিতে আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়। তার আগে যেসব নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। যতোটা সম্ভব জনসমাগম আপাতত এড়িয়ে চলা, ঘরে থাকা এবং প্রয়োজন না হলে ঘরের বাইরে না যাওয়া। এগুলো করা হয়নি বলেই সব ধরনের প্রস্তুতি থাকার পরও আমরা আক্রান্ত হচ্ছি। নিজেদের স্বজনদেরও মৃত্যুর দিকে দিচ্ছি।’

জনগণকে বারবার ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি মিডিয়া) সোহেল রানা রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘মানুষকে সচেতন করার সঙ্গে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে অনেকভাবে বলা হয়েছে। তবে অনেকেই এটি না মেনে রাস্তায় বের হচ্ছেন। সামাজিক দূরত্বও বজায় রাখছে না। এ কারণে ভাইরাসটি দ্রুত ছড়াচ্ছে। প্রয়োজনে পুলিশ এ বিষয়ে কঠোর হবে।’

আইইডিসিআরের এক হিসাবে দেখা গেছে, ১২২ জন আক্রান্তের মধ্যে রাজধানী ঢাকাতেই অর্ধশতাধিক। এসব ব্যক্তিদের বাসা রাজধানীর ২৯টি স্থানে। এগুলো হলো, বাসাবো, মিরপুরের টোলারবাগ, পুরান ঢাকার শোয়ারিঘাট, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, ধানমন্ডি, যাত্রাবাড়ী, মোহাম্মদপুর, পুরোনো পল্টন, শাহ আলী বাগ, উত্তরা বুয়েট এলাকা, সেন্ট্রাল রোড, ইস্কাটন, গুলশান, গ্রিনরোড, হাজারীবাগ, জিগাতলা, মিরপুর কাজীপাড়া, মিরপুর-১১, লালবাগ, মগবাজার, মহাখালী, নিকুঞ্জ, রামপুরা, শাহবাগ, উর্দু রোড ও ওয়ারীতে ভাইরাসটি এক থেকে একাধিক ব্যক্তিকে আক্রান্ত করেছে। ঢাকা/মাকসুদ/এসএম