করোনা প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সারা দেশে সাধারণ ছুটি চলছে। বন্ধ রাখা হয়েছে সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা। এতে কিছু জেলায় রবি ফসল (রবি শস্য ও প্রাক খরিফ শস্য) যথাসময়ে বিক্রি করতে না পারায় পচন ধরেছে। তাই ফসল বিক্রি করতে না পারায় ও যথাযথ মূল্য না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রান্তিক কৃষক।
তবে কৃষকের ক্ষতি ঠেকাতে ও উৎপাদিত ফসল দ্রুত বিক্রি করতে চারটি উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এজন্য গত সপ্তাহে জেলা প্রশাসকসহ জেলা কৃষি কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, সারাদেশে কৃষি ফসল যাতে নষ্ট না হয়, সেজন্য কৃষিপণ্য বহনের পরিবহন সাধারণ ছুটির আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। জেলার প্রান্তিক এলাকায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বসানো হয়েছে পাইকারিও খুচরা হাটবাজার।
পণ্য পরিবহনের যাতে বাড়তি ভাড়া নিতে না পারে সেজন্য মনিটরিং করছে জেলা প্রশাসন। এছাড়া রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাক, পিকআপ, ভ্যান ও অটোরিক্সাসহ বিভিন্ন পরিবহণ নিয়ে পাইকাররা আসতে পারে সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে যাতে কৃষক ন্যায্যমূল পান।
এদিকে প্রান্তিক পর্যায়ে বিভিন্ন জেলার কৃষক ও উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত রবি শস্য বাজারজাত করার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সব জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
করোনা পরিস্থিতিতে উৎপাদিত কৃষি পণ্য বিক্রির কথা মাথায় রেখে এবং ভোক্তাদের চাহিদা বিবেচনা করে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নির্দেশনা পত্রটি সব জেলা প্রশাসকদের বরাবরও পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে, করোনা সঙ্কটে কৃষি ফসলের সরবরাহ চেইন বাধাগ্রস্ত হওয়ায় চাহিদা থাকা সত্ত্বেও ভোক্তাগণ প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিষয়টি মাথায় রেখে ইতোমধ্যে টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, বরিশাল, ভোলা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও ফরিদপুরসহ বেশ কয়েকজন জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ও জেলা কৃষি অফিসের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পিকআপ, ভ্যান ও অটোরিক্সাযোগে প্রান্তিক পর্যায় থেকে ফসল সংগ্রহ করা হচ্ছে।
একইসাথে প্রচার-প্রচারণাপূর্বক শহরের গ্রোথ সেন্টার ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্র চালু করে কিছু ফল-ফসল (পেয়ারা, পেঁপে, কলা, লাউ, টমেটো, শসা, বাঙ্গি, তরমুজসহ বিভিন্ন ফসল) নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে।
ফরিদুপরের কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা ও পাশ্ববর্তী জেলা থেকে নিয়মিত পাইকার আসছেন। স্থানীয় হাটে প্রচুর ক্রেতা। কৃষক ফসলের ন্যায্যমূল্য যেনো পায় আমরা কাজ সেজন্য করছি।’
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘কৃষকের কোনো ফসলের ক্ষতি যাতে না হয়, সেজন্য স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে কথা হয়েছে। আশাকরি কৃষকের সব ফসল ন্যায্যমূল্যে বিক্রি হবে। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য যেসব কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে তাদের সহায়তা করা হবে।’
ঢাকা/আসাদ/সনি