জাতীয়

‘লাগেজ ভ্যান’ ট্রেনের কদর নেই কৃষকের কাছে

কৃষিপণ্য পরিবহনের উদ্দেশ্যে চালু হওয়া ‌‘লাগেজ ভ্যান’ ট্রেনে আগ্রহ নেই কৃষকদেরই। তিন জোড়া বিশেষ ট্রেন চালুর কথা থাকলেও প্রথমদিনে (১ মে) কৃষকেরা সাড়া না দেওয়া চলেছে দুই জোড়া ট্রেন। তবে, ধীরে ধীরে কৃষকের সাড়া মিলবে বলে আশা  করছে  রেল কর্তৃপক্ষ।

করোনা প্রতিরোধে ঘোষিত সাধারণ ছুটিতে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। মালবাহী ট্রেনেও পরিবহন করা হচ্ছে সীমিত আকারে। এ কারণে ১ মে  থেকে কৃষিপণ্য পরিবহনের জন্য তিনটি ‘লাগেজ ভ্যান’ চালু করা হয়। রুট তিনটি হচ্ছে—ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা; ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা এবং খুলনা-ঢাকা-খুলনা।

এসব ট্রেনের মাধ্যমে প্রান্তিক চাষিরা তাদের উৎপাদিত পণ্য মধ্যস্বত্ব ভোগী ছাড়াই সরাসরি ঢাকায় বিক্রি করতে পারবেন। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন—এই পদ্ধতিতে একদিকে যেমন কৃষকরা ন্যায্য দাম পাবেন, অন্যদিকে খাদ্যসংকটও কাটবে।

কিন্তু খুলনা থেকে ঢাকামুখী যে ট্রেন ছাড়ার কথা ছিল, কৃষিপণ্যের অভাবে তা বাতিল করা হয়। দ্বিতীয় দিন শনিবারও বিশেষ ট্রেনটি চলছে না। কৃষিপণ্য পাওয়া গেলে রোববার চলবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কর্তৃপক্ষ।

রেল-সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ ট্রেনে পরিবহনের উদ্দেশ্যে নতুন করে কোনো পণ্য আসেনি স্টেশনে। ট্রেনে যা পাঠানো হয়েছে, তার সবই ট্রেন বন্ধ ঘোষণার আগে আটকেপড়া পণ্য। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় যে ট্রেনটি আসে, তাতেও কোনো কৃষিপণ্য ছিল না।  মাত্র ৩৮ প্যাকেট পণ্য নিয়েই ট্রেনটি ঢাকায় আসে। এই প্যাকেটগুলোয় ছিল বেশ কিছু রাবারের স্যান্ডেল ও ফার্নিচার। অথচ এই ট্রেনের পরিবহন ক্ষমতা ছিল ২৩০ থেকে ২৪০ টন। ট্রেনে সাধারণত ভ্যান থাকে ১০ থেকে ১২ টি। কিন্তু পণ্যের অভাবে ট্রেনটি ৬টি ভ্যান নিয়ে ঢাকায় আসে। পণ্য আসে মাত্র দুটি ভ্যানে। চার ভ্যানই ছিল খালি।

 

শুক্রবার সকাল দশটায় চট্টগ্রাম রেল স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা লাগেজ ভ্যান ট্রেন সন্ধ্যা সাতটায় ঢাকা পৌঁছায়। শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটায় দেওয়ানগঞ্জ থেকে ঢাকা আসা ট্রেনেরও একই অবস্থা ছিল। এছাড়া রাত দশটায় কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে চট্টগ্রামে ফিরে যাওয়া ট্রেন ছিল প্রায় ফাঁকা।

বাংলাদেশ রেলওয়ের চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (পূর্ব) সরদার সাহাদাত আলী বলেন, ‘খুব বেশি পর্যালোচনা করে উদ্যোগ নেওয়ার সুযোগ ছিল না। তাই প্রচারণাও কম হয়েছে। স্থানীয় কৃষক-ব্যবসায়ীরা  এই বিষয়ে এখনো পুরোপুরি জানেন না।  এই ট্রেন সম্পর্কে ব্যবসায়ী-চাষি-খামারিদের আগ্রহী করতে আরও প্রচারণা চালাতে হবে। তাহলে কয়েকদিনের মধ্যেই সাফল্য আসবে।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম-ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে লাগেজ ভ্যান ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে ছাড়বে প্রতিদিন সকাল দশটায়। আর ঢাকায় পৌঁছাবে রাত সাড়ে ৮টায়।

ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা রুটের ট্রেন দেওয়ানগঞ্জ থেকে ছাড়বে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায়। ঢাকায় পৌঁছাবে রাত সোয়া ৩টায়।

খুলনা-ঢাকা-খুলনা রুটে খুলনা থেকে ছাড়বে বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে রাত সাড়ে ৩টায়।

খুলনা ঢাকা রুটের ট্রেনটি সপ্তাহের শুক্র, রবি ও মঙ্গলবার চলাচল করবে। অন্য দুটি রুটের ট্রেন সপ্তাহের ৭ দিনই চলাচল করবে। ঢাকা/হাসান/এনই