ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। সাধারণ ছুটি আর গরম উপেক্ষা করে নানা ঝক্কি-ঝামেলার মধ্যেই মানুষ ছুটছে গ্রামে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে রোববার সকাল থেকে বিভিন্ন সড়কে মানুষের ভিড় দেখা গেছে।
করোনাভাইরাসের কারণে গণপরিবহন ছাড়া অন্য সব যানবাহনের চাপ মহাসড়কগুলোতে। রোববার (১৭ মে) গাবতলী, আমিন বাজার, মহাখালী, আব্দুল্লাহপুর, ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট মহাসড়কে ছিল যানজট।
এদিকে, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীও ছিল তৎপর। এরপরও অনেকে বিভিন্ন উপায়ে ঢাকা ছাড়ছেন। রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মিনি ট্রাক, পিকআপভ্যান, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে চেপে ঢাকার বাইরে ছুটছে মানুষ। অনেকে আবার পায়ে হেঁটেও চলেছেন।
চট্টগ্রাম, সিলেটগামী যাত্রীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রথমে তারা কাঁচপুর যান। সেখান থেকে ব্রিজ পার হয়ে মাইক্রোবাস কিংবা ছোট ছোট ট্রাকে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।
ইউসুফ আর ইমন দুই ভাই। ঢাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করে। করোনাভাইরাসের কারণে কাজ বন্ধ। বাড়ি কুমিল্লায়। অনেকদিন ঢাকায় বসেই কাটিয়েছেন। সামনে ঈদ। ছুটেছেন বাড়ির পথে। দুই ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয় যাত্রাবাড়ী বাসস্ট্যান্ডে। ইউসুফ বলেন, আর কত দিন এভাবে বসে থাকা যায়। তাই বাড়ি যাচ্ছি। গাড়ি চলে না। যা চলে ভাড়া চায় অনেক।
রোববার দুপুরে কাজলায় দেখা যায়, কয়েকজন লোক বাড়ি যাওয়ার উদ্যেশে দাঁড়িয়ে আছেন। মিনিট্রাক, প্রাইভেটকার, মাইক্রো কিংবা অ্যাম্বুলেন্স দেখলেই হাত ইশারা করছেন। ব্যাগ তৈরির কারখানায় কাজ করেন শফিকুল। কথা হয় তার সঙ্গে।
তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে ঝড়ে কারখানার টিন উড়ে গেছে। চারদিন আগে নোয়াখালী থেকে ঢাকা এসেছি সেটা ঠিক করতে। এখন আবার বাড়ি ফিরছি। সেদিন ট্রাকে করে ঢাকায় আসছি। প্রাইভেটকার কিংবা অ্যাম্বুলেন্স না পেলে ট্রাকে করেই ফিরবো।
চালক আবুল হাশেম জানান, গাড়ি বন্ধ হওয়ার পর মাত্র দুইদিন হলো বের হয়েছি। রোড়ে নানা ঝামেলা। সংসার চলে না। বাধ্য হয়েই রাস্তায় নেমেছি।
ভাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দাউদকান্দি জনপ্রতি ভাড়া চারশ টাকা। কুমিল্লা বিশ্বরোড ৭০০ টাকা আর চট্টগ্রাম একহাজার টাকা।
সামাজিক দূরত্বের বিষয়ে জানতে আবুল হাশেম বলেন, এত ভাড়া দিয়ে তো আর একজন যাবে না। আর গাড়ির মধ্যে জীবানুনাশক স্প্রে, হ্যান্ড স্যানিটাইজার আছে। মাঝে মধ্যে এগুলো ব্যবহার করি। গাড়িতে যাত্রীদের ওঠানোর আগে এগুলো ব্যবহার করতে বলি।
নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক জোনের ইন্সপেক্টর মোল্লা তাসলিম হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, রোববার সকাল থেকে ডিএমপি যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করেছে। যাত্রীদের বের হতে দেয়নি। মাঝপথে আমরা বন্ধ করতে পারিনি। কেউ কেউ বিভিন্ন টেকনিক বা ছলচাতুরির পথ অবলম্বন করে বের হচ্ছেন। তারা যদি এটা করেন সেটা তো অন্য কথা। স্বাভাবিকভাবে ডিএমপি ব্লক করে দেওয়ায় কেউ বের হতে পারেননি।
এদিকে, ঈদের আগ পর্যন্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেন ঢাকা থেকে বের হতে কিংবা প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য বিভিন্ন প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হয়।
মামুন/সাইফ