জাতীয়

‘সংকট মোকাবিলার সঙ্গে অন‌্য দিকেও নজর দিতে হবে’

'করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় সরকার এবং আওয়ামী লীগ সর্বাত্মকভাবে জনগণের জন‌্য কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের আগামী ছয় মাসের একটা সুস্পষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। সংকট মোকাবিলা করতে হবে, পাশাপাশি নিরাপত্তার, স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিক বিবেচনা করতে হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শী নেতৃত্বে করোনাভাইরাস সংকট জয় হবে'।

মঙ্গলবার (১৯ মে) রাতে আওয়ামী লীগের আয়োজনে মহামারি ও পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ নিয়ে ‘বিয়ন্ড দ্য প্যানডেমিক’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ইন্টারনেট সম্প্রচারে যুক্ত হয়ে এ আশা প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

‘করোনাভাইরাস সংকটে মানবিক সহায়তা’ পর্বের অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলি ফরহাদ।

আলোচনায় ভিডিও কলে যুক্ত হয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারির শুরু থেকেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুদক্ষ হাতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সর্বোচ্চ আন্তরিক প্রচেষ্টায় দেশের প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে। করোনা সংকটে পাঁচ কোটির বেশি মানুষকে ত্রাণ সহায়তা এবং ৫০ লাখ মানুষকে নগদ অর্থ সহায়তা পাঠিয়েছেন। এ ভয়ঙ্কর প্রাদুর্ভাবের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীর মধ্যে মানুষের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সারাজীবন মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। মনোবল শক্ত রেখে এ সংকট দেশের সবাইকে মোকাবিলা করতে হবে। আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মীদের বলছি, পাশের লোকের খবর রাখুন। অনেকে কষ্টে আছে, ছিন্নমূল মানুষ আছে, তাদের পাশে দাঁড়ান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শী নেতৃত্বে সংকট জয় করবো ইনশাল্লাহ।’

করোনাভাইরাসের মহামারিতে দেশে-বিদেশে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন, বিশেষ করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে, তাদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও শোকসন্তপ্ত পরিবারে প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

আলোচনা অনুষ্ঠানের মূল প্যানেলে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ণ। সুতরাং এ জায়গাটি নিয়ে আমাদের বড় চিন্তায় পড়তে হচ্ছে না। যেখানে অনেক দেশেরই চিন্তায় পড়তে হচ্ছে কিংবা হবে। যে কারণে কৃষিতে শেখ হাসিনা সরকার ভর্তুকি সবসময়ই দিয়ে আসছে। এখন এর সীমা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, সরকার তার সাধ্যমতো চেষ্টা করছে এবং আগামী ছয় মাসের একটা সুস্পষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। এর পরেও এ সংকট কতদিন চলবে আমরা কেউ বলতে পারছি না। ইভেন সারা বিশ্বে কেউ বলতে পারছে না। একই সঙ্গে যেমন আমাদের এ সংকটকে মোকাবিলা করতে হবে, তেমনই নিরাপত্তার দিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিক বিবেচনা করতে হবে। আমাদের অর্থনীতি একটা সুস্থতার জায়গায় রাখতে হবে। সুতরাং সেই সিদ্ধান্তগুলো খুবই বিচক্ষণতার সঙ্গে সরকার করছে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে সাংবাদিক নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, এ ধরনের একটি যুদ্ধে অপ-তথ্যের সমাহার আছে, যার দুটি কারণ। একটি হচ্ছে, কেউ তথ্যের অভাবে অপতথ্য প্রচার করে। আরেকটি হচ্ছে রাজনৈতিক দলের কারণে। দেশের বাইরে থেকে এসে করোনায় কেউ মারা গেলে এর দায় সরকারকে নিতে হবে, একটি রাজনৈতিক দলের স্টেটমেন্ট এমন কিভাবে হতে পারে? এর দায় সরকারের ওপর কীভাবে পড়ে? একটি যুদ্ধের মধ্যে সরকার অবশ্যই পাশে আছে।

তিনি বলেন, তথ্য এবং অপতথ্যের লড়াই রয়েছে, আমি মনে করি সরকারের দিকে অনেক তথ্য রয়েছে। সরকার এবং দলের তৎপরতা দৃশ্যমান হচ্ছে না। মনে হচ্ছে সরকারই সব করছে, এখানে দলের কোনো অবদান নেই। এটা দলে অবস্থানের কথা প্রকাশ করা দরকার। তবে বাংলাদেশের মূল ধারার গণমাধ্যমগুলো সরকারের পাশে রয়েছে।

রাত দশটায় শুরু হয়ে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা এ আলোচনায় মূল প্যানেলে দীপু মনি, মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল ছাড়াও ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি শিপ্রা দাশ।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাড়াও দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ, ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য ভিডিও কলে যুক্ত হয়েছেন। ঢাকা/পারভেজ/এসএম