জাতীয়

করোনার ঝুঁকি নিয়েই শেষ মুহূর্তে রাজধানী ছাড়ছে মানুষ

রাত পোহালেই ঈদুল ফিতর। পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি সত্বেও রাজধানী ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরছেন অনেক মানুষ।

করোনাভাইরাস ঠেকাতে প্রায় দুই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। তাই অনেকের ক্ষেত্রে গ্রামের বাড়িতে বা পরিবারের কাছে ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। কিন্তু সরকার হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত নেয় যে, ব্যক্তিগত গাড়িতে করে চলাচল করা যাবে। এর পর দুই-তিন দিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকার উদ্দেশে ছুটছে মানুষ। যাদের নিজস্ব গাড়ি নেই তারা মাইক্রোবাস ভাড়া করে ফিরছেন পরিবারের কাছে।

রোববার রাজধানীর গাবতলী, মহাখালী, সায়েদাবাদ ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে এসে এসব স্থানে জড়ো হচ্ছেন লোকজন। তারপর মাইক্রোবাস ভাড়া করে রওনা দিচ্ছেন গন্তব্যে।

রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল সংলগ্ন এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা অনিক রহমান বলেন, ‘আমি বাড়ি যাওয়ার জন্য এখানে এসেছি। যশোরে যাব। বাস না চলায় ভেঙে ভেঙে যেতে হচ্ছে। পাটুরিয়ায় যাওয়ার জন্য এখানে প্রাইভেট কারের জন্য অপেক্ষা করছি। কিন্তু ভাড়া অনেক বেশি চাচ্ছে। এইটুকু পথ তার ভাড়া চাওয়া হচ্ছে জনপ্রতি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা।’

তিনি বলেন, ‘গণপরিবহন বন্ধ থাকায় প্রাউভেট কার ও মাইক্রোবাসের ড্রাইভাররা যাত্রীদের জিম্মি করে বেশি ভাড়া নিচ্ছে। যদি ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়া হতো তাহলে এ ভোগান্তিতে পড়তে হতো না।’

বাগেরহাটগামী যাত্রী সুমাইয়া ইসলাম বলেন, ‘করোনাভাইরাসের মধ্যেও বাড়ি যাচ্ছি। ঝুঁকি তো একটু আছেই। সঙ্গে ভয়ও করছে। কিন্তু কিছু করার নেই, বাড়িতে যেতেই হবে। প্রায় ১০ মাসের মতো হয়ে গেছে মা-বাবাকে দেখিনা। তাই ঝুঁকি নিয়েই বাড়িতে যাচ্ছি।’

রাজধানীর সায়েদাবাদ ও মহাখালীতেও একই চিত্র দেখা গেছে। মহাখালী থেকে দেশের উত্তারাঞ্চলগামী মানুষজন প্রাইভেট কার বা মাইক্রোবাস ভাড়া করছেন।

আবদুল্লাহপুর, টঙ্গী, বাটা মোড়, স্টেশন রোড, চেরাগ আলী, কলেজ গেট, তারাগাছ, গাজীপুরা এলাকাতেও ভিড় করছেন ঘরমুখী মানুষ। যে যেভাবে পারছেন সেভাবেই যাচ্ছেন।

সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল হাই হোসেন বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। তাই যাত্রীরা বাড়ি যাচ্ছেন প্রাইভেট কার বা মাইক্রোবাসে করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করছি। কোনো যাত্রীকে স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ করতে দিচ্ছি না। সবাই যেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করে সেটা নিশ্চিত করছি। অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে গাড়ি ছাড়তে দিচ্ছি না।’

 

ঢাকা/হাসিবুল/রফিক