জাতীয়

লিবিয়ায় নিহত ২৬ জনসহ ৩৮ শ্রমিক জিম্মি ছিলেন

উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ায় মানবপাচারকারীদের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ বাংলাদেশি। তবে আক্রমণের শিকার হন মোট ৩৮ বাংলাদেশি।  এর মধ্যে ২৬ জন মারা যান, আহত হন ১১ জন। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অপরজন পালিয়ে দূতাবাসকে খবর দেন।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর আ স ম আশরাফুল ইসলামের পাঠানো এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ওই চিঠিতে বলা হয়, ২৮ মে লিবিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মিজদাহতে কমপক্ষে ২৬ জন বাংলাদেশিকে লিবিয়ান মিলিশিয়ারা গুলি করে হত্যা করে। এরমধ্যে একজন প্রাণে বেঁচে যাওয়া বাংলাদেশির সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হয়।

তিনি জানান, ১৫ দিন আগে কাজের সন্ধানে বেনগাজী থেকে ত্রিপলি শহরে নিয়ে আসার পথে তিনিসহ মোট ৩৮ জন বাংলাদেশি মিজদাহ শহরে মানবপাচারকারীদের হাতে জিম্মি হতে হয়। তাদের কাছে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। অত্যাচার নির্যাতনের একপর্যায়ে মূল অপহরণকারী লিবিয়ান ব্যক্তিকে হত্যা করে অপহৃতরা। এর জের ধরে অন্য দুষ্কৃতকারীরা আকস্মিকভাবে তাদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি করে। এতে ২৬ জন বাংলাদেশি নিহত হন। তাদের মরদেহ মিজদাহ হাসপাতালে রয়েছে। বাকিরা গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ওই হাসপাতালের পরিচালক ও লিবিয়ার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন উল্লেখ করে চিঠিতে আরো বলা হয়,  মরদেহগুলোর বিষয়ে আইন অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা করবেন। এছাড়া, আহত ১১ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ত্রিপলি মেডিক্যাল সেন্টারে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সেখানে পৌঁছে আহতদের সঙ্গে দেখা করে ঘটনার বিবরণ জানার পর নিহতদের পরিচয় উদঘাটনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এখনো দূতাবাস নিহত কারো নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি। তবে ধারণা করা হচ্ছে ইউরোপ যাওয়ার উদ্দেশ্যে তারা দালালদের মাধ্যমে লিবিয়া গিয়েছিলেন।

এদিকে এ ঘটনাকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘বিদেশের মাটিতে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড খুবই পীড়াদায়ক। আমরা এর যথাযথ তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছি। আহতদের চিকিৎসারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ’    

মন্ত্রী বলেন, ‘পাচারকারীরা ত্রিপলি থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে তাদের হত্যা করে। ধারণা করা হচ্ছে, অন্য কোনো দেশে তাদের পাচার করা হচ্ছিল।’ ঢাকা/হাসান /ইভা