জাতীয়

পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনে কঠোর লকডাউন হতে পারে

জীবন-জীবিকা ও দেশের অর্থনীতির স্বার্থে ‘পরীক্ষামূলকভাবে’ লকডাউন তুলে দিয়ে সার্বিক বিষয়ে কঠোর নজরদারি করছে সরকার। তবে দেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হলে ‘কঠোর লকডাউনের’ মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

লকডাউন তুলে নেওয়ার পর যাতে মানুষ স্বাস্থ‌্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে বাধ‌্য হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  

শনিবার রাতে গণভবনে করোনা মোকাবিলা সম্পর্কিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সার্বিক আলোচনা হয়েছে।

বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বিদায়ী স্বাস্থ্য সচিব আসাদুল ইসলাম, করোনা মোকাবিলা সম্পর্কিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. শহিদুল্লাহ, কমিটির সদস্য অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান এবং কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. সেব্রিনা ফ্লোরা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ডা. আহমেদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ এবং প্রধানমন্ত্রীর সচিব তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, লকডাউন খুলে দেওয়া এবং পরবর্তী স্বাস্থ‌্যবিধি মেনে চলা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যদি দেখা যায়, সংক্রমণ বেশি বাড়ছে তাহলে সরকার আবার কঠোর লকডাউনের পথে হাঁটতে পারে। লকডাউন উঠিয়ে নেওয়ার অর্থ হলো দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি আনা, নিম্ন আয়ের মানুষ যারা খুব সংকটে আছে তাদের একটু সুবিধায় রাখা। করোনা প্রাদুর্ভাবের পর সরকার লকডাউন দিলেও মানুষ সেগুলো অনেকে মানেনি। ঈদে দলে দলে গ্রামের বাড়ি ছুটে গেছেন, আবার ঢাকায় ফিরেছেন। এজন‌্য সরকার চাচ্ছে, স্বাস্থ‌্যবিধি এবং শারীরিক দূরত্ব মেনে সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চলুক। এজন‌্য নির্দেশনা কঠোরভাবে প্রতিপালনের জন‌্য নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ডা. সেব্রিনা ফ্লোরা রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘জীবন এবং জীবিকার মাঝখানে কী করে আমরা ব‌্যালেন্স করতে পারি, সেটি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেটার ওপর জোর দিয়েছেন সেটি হচ্ছে, অর্থনীতি আমাদের রিভাইভ করে রাখতে হবে, কিন্তু একই সময়ে আমাদের রোগটা যাতে না হয়। সেজন‌্য জনগণকে যে নির্দেশনার কথা আমরা বলি, সেগুলো যাতে স্ট্রংলি ফলো করি, উনি সেটার ওপর বেশি জোর দিয়েছেন। এছাড়া, অনেক কিছু নিয়েই আলোচনা হয়েছে। তবে আমাদের স্বাস্থ‌্যবিধি মানার ক্ষেত্রে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে যে নির্দেশনাটা দেওয়া হয়েছে, সেটা যাতে আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালন করি।”

ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘লকডাউন থাকার মধ‌্যে মানুষ কিন্তু সেটি মানছে না। অথচ এটি মানা খুব দরকার ছিল। ভবিষ‌্যতে যদি পরিস্থিতির অবনতি হয় তাহলে সরকারের কঠোর থেকে কঠোরতর লকডাউনে যাওয়া ছাড়া আর উপায় থাকবে না।’

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ধরনের সমাবেশ এবং জমায়েত না করতে, কর্মক্ষেত্র-গণপরিবহনে মাস্ক-গ্লাভস পরিধানসহ স্বাস্থ‌্যবিধি ও শারীরিক দূরত্ব মেনে চলতে নির্দেশনা দিয়েছেন। এছাড়া, মৃদু উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি না হওয়া, অযথা করোনা পরীক্ষা করিয়ে টেস্টিং কিটের ওপর চাপ না ফেলা, গ্রাম পর্যায়ে করোনা সম্পর্কে আরো সচেতনতা বাড়ানোসহ সার্বিক বিষয়ে স্বাস্থ‌্য মন্ত্রণালয়কে কঠোর মনিটরিংয়ের নির্দেশনা দিয়েছেন সরকারপ্রধান। ঢাকা/পারভেজ/রফিক