জাতীয়

টিআইবির বিশ্লেষণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত : বিদ্যুৎ বিভাগ

বিদ্যুৎ খাত নিয়ে টিআইবির বিশ্লেষণকে ‘খণ্ডিত’ হিসেবে অভিহিত করে একে অনভিপ্রেত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

রোববার (৩১ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো বিদ্যুৎ বিভাগের এক বার্তায় এ কথা জানানো হয়।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) গত ২০ মে ‘চাহিদার তুলনায় বাড়তি জ্বালানি উৎপাদন সক্ষমতা অব্যাহত, ভাড়া-ভর্তুকিবাবদ অপচয় ও জনগণের ওপর অসহনীয় বোঝা: রেন্টাল বিদ্যুৎপদ্ধতি বাতিল ও পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান-২০১৬ এর সময়োপযোগী সংশোধনের দাবি টিআইবির’ শীর্ষক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয়।  এ পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ বিভাগ এ ব্যাখ্যা দিয়েছে।

এতে বলা হয়, প্রকৃতপক্ষে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত বিষয় ও তথ্যসমূহ অসমর্থিত, অনুমান নির্ভর এবং একপেশে বলে বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে প্রতীয়মান হয়।  যেখানে মরণঘাতি বৈশ্বিক মহামারি করোনার ছোবলে আজ সারা বিশ্ব অসহায়, বিশ্ব অর্থনীতি পর্যুদস্ত, বড় বড় শীর্ষ দেশগুলো নাকাল, সেখানে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত নিয়ে টিআইবির এ ধরনের বিশ্লেষণ শুধু একপেশেই নয়, অনভিপ্রেত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বটে।’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত বিষয়গুলোর ওপর বিদ্যুৎ বিভাগের মতামত সুনির্দিষ্টভাবে তুলে ধরে ব্যাখ্যায় বলা হয়, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতোই  বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের চাহিদার নিরিখে বিদ্যুৎ উৎপাদন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়ে থাকে।  যেমন পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান (পিএসএমপি) ২০০৫, পিএসএমপি ২০১০ ইত্যাদি।  এরই ধারাবাহিকতায় বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক বিদ্যুতের চাহিদার প্রক্ষেপণ, জ্বালানির প্রাপ্যতা, আঞ্চলিক লোড প্যাটার্ন, সঞ্চালন ব্যবস্থা, লিস্ট কস্ট অপশন ইত্যাদি বিবেচনায় আধুনিক বৈজ্ঞানিক টুল ব্যবহার করে পিএসএমপি-২০১৬ প্রণয়ন করা হয়।

এতে বলা হয়, পৃথিবীর যেকোনও দেশেই বিদ্যুৎ উৎপাদন পরিকল্পনায় সঙ্গত কারণে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন সক্ষমতা বেশি থাকে, যা সাধারণত রিজার্ভ মার্জিন হিসেবে পরিচিত।  রিজার্ভ মার্জিন রাখার যৌক্তিক কারণ হলো- বিদ্যুৎ কেন্দ্রের রুটিন মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষনের জন্য বন্ধ থাকা, দুর্ঘটনাজনিত কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ থাকা, পিক-অফপিক বিবেচনায় জ্বালানিভেদে বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু ও বন্ধ রাখা, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বয়স বিবেচনায় উৎপাদন সক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি। এসব কারণে কোনো কোনো দেশে রিজার্ভ মার্জিন ১০০ শতাংশের বেশি, যেমন জার্মানি। এমনকি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও রিজার্ভ মার্জিন ৭০ শতাংশের বেশি।

‘বিদ্যুৎ বিভাগ বর্তমান সংকট মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি হিসেবে করণীয় নির্ধারণের জন্য এ সেক্টরের সার্বিক ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে, যাতে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিয়ে বিদ্যুৎ খাত এ সংকট মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যেতে পারে।  তবে টিআইবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত এমন কোনো প্রতিবেদন বা সুপারিশ এখনও প্রণীত হয়নি।  বিশেষ করে সেচের জন্য বিদ্যুৎ ব্যবহারে কৃষককে প্রদেয় ভর্তুকি প্রদান বিষয়ে টিআইবির উদ্ধৃতিটি অপব্যাখ্যামূলক ও সত্যের অপলাপ মাত্র।  বরং বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন নির্ধারিত সেচ কাজে ব্যবহৃত বিদ্যুতের ট্যারিফ সর্বনিম্ন।  উপরন্তু সেচের জন্য কৃষককে প্রদেয় ২০ শতাংশ ভর্তুকি ও বহাল রয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ বা পাওয়ার সেলের কোনো প্রতিবেদনে এ ভর্তুকি বাতিলের কোনো প্রস্তাব করা হয়নি।’ হাসান/সাইফ