জাতীয়

এক সভায় যুব উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় কমলো ১৩৬ কোটি টাকা 

দেশের সাতটি জেলায় সাতটি যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে আগামী তিন বছরে। প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয় ৪৩৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। কিন্তু এক সভায় সেই প্রকল্পের ব্যয় অনেকটা কমানো হয়েছে।

বরিশালের বাকেরগঞ্জে, ফেনীর ফুলগাজী, যশোর সদরে, ময়মনসিংহের সদর, বগুড়া সদর, রংপুর সদর এবং রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে এসব কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। যুবসমাজের উন্নয়ন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য আধুনিক সুবিধাসংবলিত পরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণ করা এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য।

সোমবার পরিকল্পনা কমিশনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনার প্রকল্পটি নিয়ে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়।  পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) আবুল কালাম আজাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন।

সভায় প্রকল্পের কিছু অযৌক্তিক ব্যয় কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে ৪৩৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকার প্রকল্প কমে ৩০০ কোটি টাকায় নেমে আসছে বলে জানায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। ফলে প্রস্তাবিত ব্যয় থেকে একটা সভায় কমছে ১৩৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধান সুব্রত শিকদার বলেন, ‘‘দেশের সাতটি জেলায় সাতটি যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছি। প্রকল্পটি নিয়ে পিইসি সভায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় প্রস্তাবিত ব্যয় কমে ৩০০ কোটি টাকা করা হয়।’’

প্রকল্পের জন্য কিছু কেনা পণ্যের দামের সঙ্গে বাজারদরের ব্যাপক ফারাক দেখা গেছে। প্রতিটি লিফট ৬৫ লাখ টাকা,  এসির দাম ৫২ লাখ টাকা, সিকিউরিটি ও গেট লাইট প্রতিটি সাড়ে ১২ লাখ টাকা ও সভাকক্ষের টেবিল ১২ লাখ টাকা দাম ধরা হয়েছে।

যুব উন্নয়ন অধিদফতরের আওতায় দেশের ৫৩টি জেলায় ৫৩টি আবাসিক যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। এসব কেন্দ্রের মধ্যে ৪৭টির বহুতল একাডেমি কাম অফিস ভবন, প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য পুরুষ ও মহিলা হোস্টেল, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাসস্থানসহ বিভিন্ন অবকাঠামো রয়েছে।  নতুন এই প্রকল্প এলাকার সাতটি কেন্দ্রে আধাপাকা অবকাঠামো রয়েছে, যা বর্তমানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এতে দাফতরিকসহ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়নে সমস্যা হচ্ছে। এই জন্য নতুন করে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হবে।

এই প্রকল্পে বিভিন্ন কেন্দ্রের জন্য প্রতিটি ৫২ লাখ টাকা দরে ৫০ টন এসি কেনা হবে। সিকিউরিটি ও গেট লাইট প্রতিটির দাম ধরা হয়েছে সাড়ে ১২ লাখ টাকা। পিএবিএক্স ব্যবস্থার দাম প্রতিটি ধরা হয়েছে প্রতিটি ১৫ লাখ টাকা, লাইটনিং এরেস্টার বা আর্থিং প্রতিটি সাড়ে ১৭ লাখ টাকা, প্রতিটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক খরচ ১০ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।

এ ছাড়া সিসি ক্যামেরা ৩০ হাজার টাকা, আইপিএস ৬০ হাজার টাকা, ইনকিউবেটর ৮০ হাজার টাকা, খাঁচা ৪০ হাজার টাকা, ফুল সাচিবিক টেবিল প্রতিটি ৮০ হাজার টাকা, হাফ সাচিবিক টেবিল প্রতিটি ৫০ হাজার টাকা, রিভলভিং চেয়ার প্রতিটি ২০ হাজার টাকা, হাতলসহ কুশন চেয়ার ১২ হাজার টাকা, ঘাসকাটার মেশিন ৩০ হাজার টাকা মূল্য ধরা হয়ছে। এ ছাড়া একটি গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণেই খরচ ধরা হয়েছে ছয় লাখ টাকা। আর নির্মিত ভবন উদ্বোধনে ব্যয় হবে ২১ লাখ টাকা।

এ ব্যাপারে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) আবুল কালাম আজাদ রাইজিংবিডিকে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে  যুব সমাজে অনেক ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

তিনি বলেন, ‘‘সাতটি কেন্দ্রে যুব উন্নয়নে নানা ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ নিয়ে যুবকেরা কর্মসংস্থান খুঁজে পাবেন। প্রকল্পটি নিয়ে একটা সভা করেছি। ব্যয় কমানোর জন্য সভায় সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’’ 

 

ঢাকা/হাসিবুল/বকুল