জাতীয়

করোনায় সুন্দরবনে বেপরোয়া অপরাধীরা

করোনায় পর্যটকদের জন‌্য সুন্দরবন ভ্রমণ বন্ধ থাকার সুযোগে অবাধে হরিণসহ বন‌্যপশু হত‌্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ‘সুন্দরবন ট্যুর’-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উজাড় হচ্ছে ‘কর্তননিষিদ্ধ’ গাছ, বিষ দিয়ে মারা হচ্ছে হাজার হাজার টন মাছ। এরফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে।  এই ধরনের অপরাধ বন্ধে সুন্দরবনকে পর্যটকদের জন‌্য খুলে দেওয়ার আহ্বান জানয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।  তারা বলছেন, সুন্দরবন খুলে দিলে অপরাধীদের তৎপরতা কমে আসবে। 

এই বিষয়ে খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মো. মঈনউদ্দিন বলেন, ‘সুন্দরবনের পরিবেশের স্বার্থে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সুন্দরবনে আবার কবে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারবো না। আশা করি, আগামী মাসে এই বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে একটি সিদ্ধান্ত আসবে।’

সুন্দরবনের গাছ কাটা, বিষ দিয়ে মাছ শিকার, হরিণ শিকারের মতো অপরাধ স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেড়েছে—এই প্রসঙ্গে জবাব এড়িয়ে মঈন উদ্দিন বলেন, ‘আমি সুন্দরবনকেন্দ্রিক ট্যুর অপারেটরদের সঙ্গে একটি মিটিংয়ে আছি। এ অবস্থায় আপনাকে সময় দিতে পারছি না।’  

এদিকে, বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন খুলে দেওয়ার দাবিতে খুলনা বন ভবনের সামনে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোশিয়েশন অব সুন্দরবন (টিওএএস) মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।   এ বিষয়ে ‘ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোশিয়েশন অব সুন্দরবন’ (টিওএএস)-এর যুগ্ম-সম্পাদক মাযহারুল কচি বলেন, ‘পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন খুলে দেওয়ার দাবিতে বন সংরক্ষকের কাছে স্মরকলিপি দিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘এর আগে পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন খুলে দিতে জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছিলাম। জেলা প্রশাসন স্বাস্থ্যবিধি সম্পূর্ণভাবে অনুসরণসহ কয়েকটি শর্ত দিয়ে ট্যুরের অনুমোদন দেয়। কিন্তু বন বিভাগ থেকে বলা হচ্ছে, সংসদীয় কমিটির সুপারিশে তারা এ মুহূর্তে কোনো ট্যুরের অনুমোদন দিতে পারছেন না। ’

মাযহারুল কচি আরও বলেন, ‘সুন্দরবনে পর্যটকদের ঢোকা বন্ধ থাকায় একদিকে ট্যুরসংশ্লিষ্ট কয়েক হাজার মানুষ জীবিকাহীন হয়ে পড়েছেন, অন‌্যদিকে সরকার হারাচ্ছে বিপুল রাজস্ব। আর এরই সুযোগে অপরাধীরা উজাড় করে দিচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। শিকার করছে হরিণ।’ তিনি আরও বলেন, ‘পর্যটকদের জন‌্য সুন্দরবন খুলে দিলে এখানে অপরাধ অনেক কমে যাবে। বনরক্ষার স্বার্থেই পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন খুলে দেওয়া উচিত।’

একই দাবি জানালেন ফেমাস ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের কর্ণধার তানজির এইচ রুবেল। তিনি বলেন, ‘পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন খুলে দিলে কোনো ক্ষতি হবে না। বরং লাভই হবে। সুন্দরবনের অপরাধও বন্ধ হবে। ’ উল্লেখ‌্য, করোনার সংক্রমণ রোধে সরকার গত ১৯ মার্চ সুন্দরবনে পর্যটকদের সমাবেশকে নিষিদ্ধ করে।