ফাতমা খানঢাকা, ৮ ফেব্রুয়ারি : সুমন্ত আসলাম। এখনকার তরুণ পাঠকের কাছে ‘প্রিয় লেখক’ নাম এটি। দু’চোখ ভরা স্বপ্ন তার। দেশ, জাতি, সমাজ, মানুষ সবাইকে নিয়েই তিনি স্বপ্ন দেখেন। সবার ভালো থাকার স্বপ্ন দেখেন। অনেক ভালোবাসা নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। আর, সে সব স্বপ্নের বীজ তিনি বপন করেন পাঠকের মনেও। তাইতো কাছের বন্ধুরা তাকে বলে স্বপ্নবাজ।
লেখালেখির শুরু সম্পর্কে জানান, ‘লেখালেখির শুরু ঢাকায় আসার পরে। ‘মৌচাকে ঢিল’ (যায় যায় দিনেরও আগে প্রকাশ হত) শিরোনামের পত্রিকায় গল্প ছাপা হত। সেই গল্প পড়ে এবং সেবা প্রকাশনীর কিশোর পত্রিকা পড়ে পড়ে মনে হলো আমিও গল্প লিখতে পারবো। এটা ১৯৯৬ সালের দিকের কথা। তখন ভোরের কাগজের পাঠক ফোরাম ছিলো। সেই পাঠক ফোরামে ভালো লেখার জন্য ১০০ টাকার প্রাইজবন্ড পুরস্কার দেয়া হতো। আমি পরপর কয়েকবার সেই পুরস্কার পেয়ে গেলাম। তখন মনে হলো আমার লেখা মানুষ পছন্দ করবে। সুতরাং, লেখালেখিটা করাই উচিৎ। মূলত সেই থেকেই শুরু। আর প্রথম বই প্রকাশ হয়েছিলো সময় প্রকাশন থেকে। ছোটগল্পের বই ‘স্বপ্নবেড়ি’।”
সুমন্ত তার পেশা সম্পর্কে জানান, লেখালেখিই এখন তার পেশা। নেশাও। কারণ, এই কাজটাকে অনেক উপভোগ করেন তিনি। এক সময় জড়িয়ে পরেন সাংবাদিকতায়। দেশের জনপ্রিয় একটি সংবাদপত্রে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। এখনও কাজ করছেন সংবাদপত্রেই। তার মতে সাংবাদিকতার সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে, এই পেশায় থেকে মানুষের অনেক উপকার করা সম্ভব। অনেক পেশার মানুষের পক্ষেই যা করা সম্ভব হয় না।
নতুনদের সম্পর্কে তিনি বলেন, এখনকার তরুনদের যে বিষয়টি হয়েছে তা হচ্ছে তারা ইচ্ছে করলেই বই বের করে ফেলতে পারছেন। ফলে এর মর্মটা অনুধাবন করতে পারছেন না। বিষয়টা হয়েছে কি, আমি যদি ইচ্ছে করলেই আকাশ ছুঁতে পারি তবে তো আমার আকাশ ছোঁয়ার আনন্দই থাকবে না। এখনকার লেখকদের ক্ষেত্রেও বিষয়টি এমনই হয়েছে।
তবে, নতুনদের লেখা পরতে আমার ভালো লাগে। আর একটা ব্যাপার হচ্ছে আমি যে লেখাই পরি না কেন যদি প্রথম অংশটা পরে আমার ভালো লাগে তবে আমি সম্পূর্ণ লেখাটাই পড়ি। সেটা যার লেখাই হোক আর যে কোন ধরণের লেখাই হোক না কেন।
এবারের মেলায় তার লেখা বই প্রকাশ হচ্ছে মোট নয়টি। যার মধ্যে তিনটি উপন্যাস, দু’টি কিশোর উপন্যাস, রম্য-বিদ্রুপ আর গল্পের বই একটি করে এবং দু’টি সমগ্র।
সবমিলিয়ে ভালোই লাগছে। সবচেয়ে বড় কথা, স্টলগুলোকে এত চমৎকারভাবে সাজানো হয়েছে, একদিক দিয়ে পাঠক ঢুকলে যেকোন রাস্তা দিয়েই বের হোক না কেন প্রতিটা স্টল তার দেখা হয়ে যাবে। এটা বাংলা একাডেমিতে কোনভাবেই সম্ভব ছিলো না।
জানালেন তার বাসায় এখন একটা লাইব্রেরি আছে সাড়ে তিন হাজার বইয়ের সংগ্রহ। তার স্বপ্ন সেখানে আর সারা দেশেই এমন লাইব্রেরি করার। ইতোমধ্যেই এই স্বপ্নের বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছেন বলেও জানান তিনি। লাইব্রেরিকে ঘিরে এখন অনেক ব্যস্ততা। এ বিষয়ে কিশোর পাঠকদের জন্য একটি চমক নিয়ে আসছেন তিনি। যার জন্য পাঠকদের অপেক্ষা করতে হবে আগামী স্বাধীনতা দিবস পর্যন্ত।রাইজিংবিডি / ফাতমা খান / রাশেদ শাওন