জাতীয়

‘বাংলাদেশ-ভুটান স্বাক্ষরিত পিটিএ উভয় দেশের সম্পর্ক সুদৃঢ় করবে’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ‌্যে স্বাক্ষরিত অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) দুই দেশের সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করতে ভূমিকা রাখবে।’

রোবরার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর হেয়ার রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ‌্যে পিটিএ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং সে দেশের রাজধানী থিম্পু থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে অংশ নেন। বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী এবং ভুটানের অর্থমন্ত্রী নিজ নিজ দেশের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন সময় এসেছে, পারস্পরিক সুবিধার জন্য এবং উভয় দেশের নাগরিকদের সামগ্রিক উন্নতি ও কল্যাণের জন্য আমাদের অসাধারণ সম্পর্ককে আরও বেশি অর্থবহ করে তুলতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আজ ভুটানের সঙ্গে পিটিএতে স্বাক্ষর করেছি। এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ এবং ভুটান থেকে বিপুল পরিমাণ পণ্য একে অপরের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে। চুক্তিতে পারস্পরিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে অতিরিক্ত তালিকা অন্তর্ভুক্ত করারও বিধান আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য এটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। কেননা, আমরা বিশ্বের কোনো দেশের সঙ্গে আমাদের প্রথম পিটিএ স্বাক্ষর করছি। আর ভুটানই প্রথম দেশ, একাত্তরে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের শেষদিকে স্বাধীন এবং সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে।’

মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভোম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া ভুটানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তির এই দিনটিকেই পিটিএ স্বাক্ষরের দিন হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী টান্ডি দরজি এবং অর্থমন্ত্রী লিয়নপো লোকনাথ শর্মা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। বাংলাদেশের বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দিন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিযোগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম, বাংলাদেশে ভুটানের রাষ্ট্রদূত কুসাব রিনচেন কিউয়েনটিল এবং ভুটান প্রান্তে সে দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত একেএম শহিদুল করিম উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ-ভুটান সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রী একযোগে একটি লোগো উন্মোচন করেন এবং পৃথক কেক কাটেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পিটিএ চুক্তির ফলে ভুটান তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত কৃষি পণ্য এবং ইলেকট্রনিক্সসহ ১০০টি বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে শুল্ক সুবিধা দিতে সম্মত হয়েছে। অন্যদিকে, ফলসহ ৩৪টি ভুটানি পণ্য বাংলাদেশে একই সুবিধা পাবে। পরবর্তীতে আলোচনার মাধ্যমে আরও পণ্য দুই দেশের তালিকায় যুক্ত করা হবে। এ চুক্তির মধ‌্যে দিয়ে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক পিটিএ এবং এফটিএ স্বাক্ষরের যাত্রা শুরু হলো।